মাদারীপুর: ‘বিদআত’ অজুহাতে মাদারীপুর সদর উপজেলায় প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো একটি বটগাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
সোমবার (৫ মে) শত শত মানুষ শতবর্ষ পুরাতন বট গাছটি কেটে ফেলেন।
গাছটি কেটে ফেলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গাছটি দেখতে ভিড় করেন আশপাশের এলাকার বিভিন্ন বয়সী মানুষ। শতবর্ষী গাছটি কেটে ফেলায় অনেকে ক্ষোভও প্রকাশ করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছে উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ।
জানা গেছে, জেলার সদর উপজেলার চরঘুনসি এলাকার বাসিন্দা আব্দুর সাত্তার হাওলাদারের মালিকানাধীন গাছটি ১৫০০ টাকায় আলেমরা ক্রয় করার পর এটি কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে, এ ব্যাপারে যোগাযোগ করেও সাত্তার হাওলাদারের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, গাছটিকে ‘অলৌকিক শক্তিধর’ মনে করে অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন স্থানের সাধারণ মানুষ গাছটির গোড়ায় ‘মানত’ রাখতো। মোমবাতি, আগরবাতির পাশাপাশি নতুন গামছা, কাপড়, মিষ্টি, ফলমূল রেখে যেতো। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় আলেমদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ ছিল। গাছের গোড়ায় এসব ‘মানত’ রাখা ‘বিদআত’ মনে করা হয়। স্থানীয় আলেমসহ শতাধিক মানুষ মিলে সোমবার গাছটি কেটে ফেলা হয়। তবে গাছ কাটতে কেউ বাধা দেননি।
মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. বাবুল হোসেন বলেন, এভাবে গাছটি না কেটে গাছটি বাঁচিয়ে রাখা উচিত ছিল। যদি কেউ গাছের গোড়ায় মিষ্টি বা নতুন কাপড় দান কিংবা মোমবাতি বিতরণ করে থাকে, তাহলে তাদের বোঝানো যেত। এভাবে পুরোনো একটি গাছ কেটে ফেলা উচিত হয়নি।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা হাবিব আহম্মেদ চৌধুরী জানান, বটগাছের গোড়ায় এমন কর্মকাণ্ড ইসলাম সমর্থন করে না। যারা গাছের গোড়ায় আগরবাতি, মোমবাতি দিয়ে এমন কাজ করে তারা ধর্মে বিশ্বাস করে না। যেমন চোরে শোনে না ধর্মের কাহিনি। তাই স্থানীয় আলেম সমাজের পক্ষ থেকে কেটে ফেলা হয়েছে গাছটি।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব জানান, পুরোনো গাছ কেটে ফেলার খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এটির পেছনে তৃতীয় কোনো পক্ষ কাজ করছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া বন বিভাগ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরআইএস