ঢাকা: প্রতিবছর জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করলেও এবার গতানুগতিক প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে ব্যতিক্রম কিছু করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় আগামী অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠেয় উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠক প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে অনুমোদন হবে আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট। উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেটটি অনুমোদনের পরে তাতে সই করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
এদিন দুপুরে বাজেট ডকুমেন্টস নিয়ে রামপুরার বিটিভি ভবনে যাবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেখান থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি বিকেল ৩টায় ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট বক্তৃতা প্রচার করা হবে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম বিটিভি থেকে বাজেট ঘোষণা করা হবে। একই সঙ্গে সোমবার ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতা সমাপ্তির পরপরই এ সংক্রান্ত ডকুমেন্টস অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে। এছাড়া ঢাকায় তথ্য অধিদপ্তর থেকে সচিবালয়ে প্রবেশে অনুমতিপ্রাপ্ত গণমাধ্যমকর্মীরা দুপুর ৩টা থেকে বাজেট ডকুমেন্টস ও বাজেট বক্তৃতার কপি সংগ্রহ করতে পারবেন।
জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি ধারণযোগ্য পর্যায়ে রেখে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় গতবারের চেয়ে ছোট বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী বাজেট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের আকার ঠিক করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। নতুন বাজেটের আকার কমলেও পরিচালন বা অনুন্নয়ন খাতে বরাদ্দের প্রাক্কলন করা হচ্ছে ৫ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। তবে উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ কমিয়ে ২ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার পরিকল্পনা করা হয়েছে। চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) চলতি অর্থবছরের ব্যয়ের পরিকল্পনা ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী বাজেটে যা ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকুচিত মুদ্রানীতির সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি ব্যয় কমানো এবং বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য করতেই আকার কমানো হচ্ছে।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে কর ছাড় কমিয়ে রাজস্ব বোর্ড নতুন কর ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক উন্নতির মাধ্যমে অতিরিক্ত ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আগামী অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তা ৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।
এছাড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং খাদ্য মজুত ও বিতরণ ব্যবস্থা সুসংহত করতেই সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। একইভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের মতো জুলাই আন্দোলনের আহত সরকারি গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধাদের আয় করে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা থাকতে পারে এ বাজেটে। নানা মহলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাড়ানো হতে পারে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা।
জিসিজি/আরআইএস