ঢাকা, সোমবার, ৯ ভাদ্র ১৪৩২, ২৫ আগস্ট ২০২৫, ০১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

বিএনপির যাদের জন্য ১৫ বছর লড়াই করলাম, তারাই ধাক্কা মারল: রুমিন ফারহানা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:০২, আগস্ট ২৪, ২০২৫
বিএনপির যাদের জন্য ১৫ বছর লড়াই করলাম, তারাই ধাক্কা মারল: রুমিন ফারহানা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রুমিন ফারহানা

বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, ১৫ বছরে যা হয় নাই, আজ হয়েছে। অলমোস্ট আমার গায়ে ধাক্কা দিয়ে আমাকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

যে বিএনপির নেতাকর্মীদের জন্য গত ১৫ বছর লড়াই করলাম, তারা আমাকে এখন ধাক্কা দেয়।

রোববার (২৪ আগস্ট) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের সীমানা নিয়ে শুনানি শেষে তিনি এমন অভিযোগ করেন। শুনানিতে সিইসির সামনেই দুপক্ষ মারামারিতে জড়িতে পড়ে।

রুমিন ফারহানা বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়, হলো এখানে মারামারি হয়েছে। আমি যেহেতু একজন আইনজীবী, আমি মনে করেছি আমার কেস আমি নিজেই প্রেজেন্ট করব। সো আমার কেস আমি প্রেজেন্ট করেছি।  

তিনি বলেন, আশা করেছিলাম নির্বাচন কমিশনের সম্মানের দিকে তাকিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে যারা আছেন, তারা গুন্ডা-পান্ডা নিয়ে ঢুকবে না। নির্বাচন কমিশনে আনফরচুনেটলি আমি দেখলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে যিনি প্রার্থী, তিনি সদলবলে ২০-২৫ জন মিলে গুন্ডা-পান্ডার মতন, তারা সেখানে যে আচরণ করেছে, অত্যন্ত দুঃখজনক, অত্যন্ত লজ্জাজনক। আমি মনে করি, এটা কমিশনের যে গাম্ভীর্য এবং যে সম্মান সেটার সঙ্গে এটা যায় না।

তিনি এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, আমি আপনাদের কিছু ছবি দেখাচ্ছি। তারা এলাকায় বিভিন্ন মানুষকে কীভাবে পিটিয়ে পিটিয়ে তারা স্বীকারোক্তি আদায় করেছে। সো দিস ইজ নেচার। হ্যাঁ, এখনো ইলেকশন আসে নাই। একটা সীমানা নির্ধারণ নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের যিনি আছেন, তিনি এভাবে পিটিয়ে পিটিয়ে মানুষকে স্বীকারোক্তি নিয়েছেন।  

তিনি বলেন, আমি কোনো গুন্ডা-বদমাশের মেলা করি নাই। করতে চাইলে করতে পারতাম। গুন্ডা আনতে চাইলে আনা যায়। অসুবিধা হয় না। আমি ভদ্রলোক নিয়ে এসেছি। যেটা রায় হয়, হবে। কিন্তু তারা যেহেতু গুন্ডা-পান্ডা নিয়ে এসেছে এবং আবোল তাবোল কথা বলেই যাচ্ছে বলেই যাচ্ছে, আমি লাস্টে একটা কথা বলার জন্য দাঁড়িয়েছি।

রুমিন ফারহানা বলেন, যা ২৫ বছরে হয়নি, সেটা আজ হয়েছে, অলমোস্ট আমার গায়ে ধাক্কা দিয়ে আমাকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। যে বিএনপির নেতাকর্মীদের জন্য গত ১৫ বছর লড়াই করলাম, তারা আমাকে এখন ধাক্কা দেয়। তো ঠিক আছে, ধাক্কার বদলে তো ধাক্কা আসবেই, তাই না!

বিএনপির এই নেত্রী বলেন, নির্বাচনের আগে একটা সীমানা নিয়ে যদি এমন আচরণ আমরা দেখি, নিজের দলের মধ্যে, নির্বাচনে কী হবে?

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাঞ্জাবি পড়া একজন ধাক্কা আমাকে দিয়েছে। আমার লোক তো বসে থাকবে না, আমি তো একজন মহিলা। পরে যখন আমার লোকজনকে মারধর করেছে, আমার লোকজন জবাব দিয়েছে, সিম্পল।

সীমানা নিয়ে বিএনপির এই নেত্রী বলেন, ২০০৮ সালের আগে যে সীমানা ছিল সেখানেই আমাদের এখন ফিরে যাওয়া উচিত। মাঝখানে ১৫ বছর একটা ফ্যাসিস্ট সরকার ছিল যারা তাদের নিজস্ব ভোট কারচুপির জন্য নিজস্ব সুবিধা অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করেছে।  

তিনি বলেন, সেই সীমানা আমরা মানি না। সেজন্য আমরা বলেছি ২০০৮ সালের আগে যে সীমানা ছিল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইচ্ছা ছিল সেখানে যাওয়া হোক। আমাদের ভোটার সংখ্যা ৬ লাখ, বিজয়নগরের ভোটার সংখ্যা বা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের ভোটার সংখ্যা ছয় লাখ ১০ হাজার।

তিনি আরও বলেন, আশুগঞ্জে ভোটার সংখ্যা চার লাখ ২০ হাজারের মতো। আর তিনটি ইউনিয়নের ভোটার হলো এক লাখ। এই এক লাখ যদি সরাইলের সঙ্গেও যুক্ত হয়, তারপরে দেখা যাবে যে সদরের সঙ্গে বা বিজয়নগরের সঙ্গে সরাইলে ভোটার পার্থক্য অলমোস্ট দুই লাখ থেকে যায়। সো এত বড় একটা আসন সদর বা বিজয়নগর সেই আসনটা অযৌক্তিক।

রুমিন ফারহানা বলেন, সরাইলে যদি তিনটি ইউনিয়ন চলে আসে, তাহলে ভোটার সংখ্যায় ব্যালেন্স তৈরি হয়। এ ছাড়া এই তিন ইউনিয়নে যারা বাস করে বুদন্তি, চাঁদপুরা এবং হরশপুরে; তাদের জমি-জমার বেশিরভাগ কাজ সরাইলের সঙ্গে থাকে। সো তাদের জমি রেজিস্ট্রি থেকে শুরু করে অন্যান্য যে দাপ্তরিক কাজ সেটা সরাইলে গিয়ে করতে হয়। সে কারণে আমি বলেছি এই তিনটা ইউনিয়নকে সরাইলের সঙ্গে যুক্ত করে দেয়া হোক।

তিনি বলেন, আরেকটি কথা হলো তিনটি ইউনিয়নের লোকজন যদি বিজয়নগরে যায়, তাদের যাতায়াতের সময় লাগে অলমোস্ট দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। আর যদি তারা সরাইলে আসে,  সময় লাগে ১৫ থেকে ২০ মিনিট। তাহলে তাদের কোথায় থাকা উচিত? সরাইলে থাকা উচিত নাকি বিজয়নগরে থাকা উচিত? এই প্রশ্নগুলোই আমি নির্বাচন কমিশনে তুলেছিলাম।  

ইইউডি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।