ঢাকা, বুধবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনে জাপানের সহযোগিতা চান প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৩৯, সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫
বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনে জাপানের সহযোগিতা চান প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে

ঢাকা: দেশের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন, ভাষা প্রশিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক প্রস্তুতির মাধ্যমে জাপানের শ্রমবাজারের চাহিদা পূরণে প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। একই সঙ্গে জাপানে অধিকসংখ্যক কর্মী প্রেরণে মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনে জাপান সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে আইএলও কার্যক্রমবিষয়ক জাপানিজ পার্লামেন্টারিয়ান লীগের ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।

দ্য কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব জাপানের সেক্রেটারি জেনারেল, হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস সদস্য মিসিহিরো ইশিবাসি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি, বিশেষ করে জাপানে দক্ষ কর্মী প্রেরণসংক্রান্ত বিষয়ে মতবিনিময় করেন।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশ ও জাপান-দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ক আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। জাপান বাংলাদেশের এক অকৃত্রিম ও বিশ্বস্ত বন্ধু। ওআইসিডিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জাপানই ছিল প্রথম দেশ যারা ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অন্তত ১০ লাখ কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন। প্রবাসে কর্মরত এসব শ্রমিক দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।

ড. আসিফ নজরুল জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বৈদেশিক কর্মসংক্রান্ত একটি জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি রয়েছে। অন্যান্য ১৩টি মন্ত্রণালয় এই কমিটির সদস্য।

তিনি বলেন, দেশের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন, ভাষা প্রশিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক প্রস্তুতির মাধ্যমে জাপানের শ্রমবাজারের চাহিদা পূরণে প্রস্তুত করা হচ্ছে।  

জাপানে গমনেচ্ছুদের জন্য ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করা, ঢাকায় জাপান ফাউন্ডেশন অফিস স্থাপনের আহ্বানও জানান তিনি।  

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পলিসি অ্যাডভাইজার জিয়া হাসান। মূল প্রবন্ধে জাপানে কর্মী প্রেরণে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং জাপানে নিরাপদ অভিবাসনের জন্য বাংলাদেশের অঙ্গীকার তুলে ধরা হয়।

জিয়া হাসান বলেন, ডেমোগ্রাফিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আগামী ১৫ বছরে জাপানে অন্তত ১ কোটি ২০ লাখ কর্মীর প্রয়োজন হবে। বৈশ্বিক এই সুযোগ কাজে লাগাতে আমাদের বিশাল জনশক্তিকে প্রস্তুত করার বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে জাপানে বাংলাদেশ সেল গঠন, অভিবাসীদের সহায়তায় আগমন-পরবর্তী ওরিয়েন্টেশন ও হেল্প ডেস্ক চালু, অভিবাসনসংক্রান্ত তথ্য ও সেবায় সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে তথ্য পোর্টাল এবং খাতভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ‘জাপান-বাংলাদেশ বিশেষ দক্ষতা প্রশিক্ষণ জোন’ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

প্রতিনিধিদলের অপর সদস্যরা হলেন, জাপানের হাউজ অব কাউন্সিলর, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভাইস-সেক্রেটারি জেনারেল মিস. হানাকো জিমি, হাউজ অব কাউন্সিলর,এক্সিকিউটিভ বোর্ড মেম্বার মি. রিউজি সাতোমি, হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ, দ্যা কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি নেতা মি. কেনেটা ইজুমি, হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট এমপি মিস মাকিকো ডোগোমি, হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ, দ্য কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি নেতা মিস মাকি ইকেডা, হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ, দ্যা কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি নেতা মি. মামোরু উমেতানি, এমপি ও এক্সিকিউটিভ বোর্ড মেম্বার মি. আতশুশি অসিমা।  

এছাড়া প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা সিনিছিও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।  

জিসিজি/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।