ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ ভাদ্র ১৪৩২, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

সাভার-আশুলিয়ায় তিন ছাত্র হত্যা মামলা: হাসিনা-কাদেরসহ অভিযুক্ত ২০৮ জন

অতিথি করেসপন্ডেন্ট, সাভার (ঢাকা) | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:২০, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫
সাভার-আশুলিয়ায় তিন ছাত্র হত্যা মামলা: হাসিনা-কাদেরসহ অভিযুক্ত ২০৮ জন

ফ্যাসিস্টবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া তিনটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ। মামলাগুলোর মধ্যে একটি সাভার মডেল থানায় ও দুটি আশুলিয়া থানায় দায়ের করা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবীর এ তথ্য নিশ্চিত করেন। প্রায় এক বছরের তদন্ত শেষে এই তিন মামলার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।

সাভার মডেল থানার মামলা

২০২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর শহীদ নবী নুর মোড়লের স্ত্রী আকলিমা বেগম বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় ১২৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে প্রমাণ মিললে ১১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। তবে ১৮ জনের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সাভারের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব, পৌরসভার সাবেক মেয়র হাজী আব্দুল গণি, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফকরুল আলম সমর, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেনসহ মোট ১১৪ জন।

আশুলিয়া থানার মামলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মামুন খন্দকারের স্ত্রী মোসাম্মৎ সাথী বাদী হয়ে গত বছরের ২২ আগস্ট আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। শুরুতে ৩৩ জনকে আসামি করা হলেও তদন্তে আরও ১৯ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় মোট ৪৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে। অপরদিকে এজাহারনামীয় ৭ জনসহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে প্রমাণ না মেলায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এ মামলার চার্জশিটভুক্তদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক এমপি সাইফুল ইসলাম, ইয়ারপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম আহম্মেদ সুমন ভূঁইয়া, আশুলিয়া থানা যুবলীগ আহ্বায়ক কবির সরকার, আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক মুন্সী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা লীগ নেত্রী মনিকা হাসান, ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিউর রহমান মতি, ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নূরুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মারুফ হোসেন সরদার, সাবেক পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি, আশুলিয়া থানার সাবেক ওসি এএফএম সায়েদসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ৪৫ নেতাকর্মী ও পুলিশ কর্মকর্তারা।

শহীদ রমজান আলীর বাবা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে গত বছরের ২৮ আগস্ট আশুলিয়া থানায় আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছিল। তদন্ত শেষে ৪৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করা হয় এবং ১৭ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক এমপি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে। এছাড়া ফারুক হাসান তুহিন, সাবেক চেয়ারম্যান মো. পারভেজ দেওয়ান, সুমন ভূঁইয়া, কবির সরকার, ধামসোনা ইউনিয়ন যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সিকদার, সাধারণ সম্পাদক মনসুর মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের জেলা সম্পাদক মো. জালাল, সাবেক ইউপি সদস্য সাদেক ভূঁইয়াসহ মোট ৪৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবীর বলেন, সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই থানায় দায়ের হওয়া মামলাগুলো খুব সূক্ষ্মভাবে তদন্ত চলছে। এর মধ্যে তিনটি মামলার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছে। বাকি মামলাগুলোর প্রতিবেদনও পর্যায়ক্রমে আদালতে দেওয়া হবে।

এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।