আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই মহাউৎসবের নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে স্বৈরাচার সৃষ্টির সব পথ বন্ধ করতে সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আলাদিনের চেরাগের দৈত্য সৃষ্টি করে দিয়েছে আমাদের। আমরা তার কাছে কি চাইবো? আমরা কি তার কাছে এক কাপ চা চাইবো? নাকি আমাদের দুনিয়া পাল্টে ফেলতে চাইবো?
তিনি বলেন, ওই দৈত্যকে আমরা সব থেকে বড় কাজটা দিবো। যেটা আর কেউ কোনোদিন চাইবারও সুযোগ পাবে না। এ দৈত্যও কোনোদিন পাবে না। একবারই পাচ্ছি আমরা এ দৈত্য। … এই একবারই সুযোগ। আলাদিনের দৈত্য আর কোনোদিন ফিরে আসবে না।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ জাতিকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাবে তৈরি করে দিয়ে যাবো, আমাদের হাতে সেই সুযোগ এসেছে। ছাত্র-জনতা আমাদের এ সুযোগ দিয়েছে। সেখানে ছোট খাটো জিনিসে আটকে না গিয়ে বড় জিনিস যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি। আমরা বড় জিনিস চাই, যে এই জাতিকে আমরা যেভাবে চালু করে দিবো, এ জাতি শুধু উপরের দিকে উঠবে। আর ডানে-বাঁয়ে তাকানোর দরকার নেই।
সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমাদের এত সংস্কার কেন দরকার হচ্ছে, সব পথঘাট বন্ধ করা যেন স্বৈরাচার আর যেন কোনো দিক থেকে বের হয়ে আসতে না পারে। স্বৈরাচার সৃষ্টির রাস্তাগুলো বন্ধ করে দেওয়া। কোনো দিক থেকে সে যেন বের হতে না পারে। সেই স্বৈরাচারকে বন্ধ করতে হলে আমাদের সবাইকে একমত হয়ে এটা করতে হবে। দ্বিমতের কোনো জায়গা এখানে নেই।
তিনি বলেন, আমরা অনেক কথা বলতে পারি, কিন্তু দ্বিমত করে সমাপ্ত করতে পারবো না। আমার একান্ত আবেদন যখনই এই সনদ করবেন, কোলাকুলি করে। তাহলে নির্বাচন সার্থক হবে।
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, উৎসবের মধ্যেই যেন নির্বাচনটা হয়ে যায়। ভেতরে কোনো রকমের দুশ্চিন্তা রেখে আমাদেরকে যেন নির্বাচনে ঢুকতে না হয়। উৎসবের মধ্যেই নির্বাচন হবে এবং নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হবে।
তিনি বলেন, ইতিহাসের একটা স্মরণীয় অধ্যায় রচনা করেছেন, এটাকে নিঁখুত করার জন্য, যে কয়টা দিন বাকি আছে নির্বাচন পর্যন্ত, যাতে করে কোনো রকম মনের মধ্যে কষ্ট না নিয়ে, মনের মধ্যে কোনো রকম খুঁতখুঁতি না নিয়ে নির্বাচন করতে পারি।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, যে সমস্ত ভয়ংকর কথাবার্তা আমরা শুনি, সেই ভয়ংকর কথাবার্তা যেন বাস্তবে আমাদের দেখতে না হয়। আমরা সুন্দরভাবে নির্বাচন করে নতুন যাত্রা আমরা শুরু করবো, জাতি হিসেবে মহাউৎসবের যাত্রা আমরা শুরু করবো।
এমইউএম/জেএইচ