ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ আশ্বিন ১৪৩২, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

ফ্যাসিবাদ দূর করতে পেরেছি, তামাক পারব না কেন: উপদেষ্টা ফরিদা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:৫৫, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫
ফ্যাসিবাদ দূর করতে পেরেছি, তামাক পারব না কেন: উপদেষ্টা ফরিদা

তরুণদের উদ্দেশে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ফ্যাসিবাদের মতো কঠিন রোগ বাংলাদেশ থেকে দূর করতে পেরেছি, তামাক দূর করতে পারব না কেন?

তিনি আরও বলেন, তরুণদের টার্গেট করেই তামাক কোম্পানিগুলো কৌশল সাজায়। কারণ, ২০-২৫ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের যদি তামাকে আসক্ত করা যায়, তবে তারা অন্তত ৫০ বছর ধরে সিগারেটের বাজার নিশ্চিত করতে পারে।

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে নারী মৈত্রী আয়োজিত “নারী, শিশু ও তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার গুরুত্ব” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফরিদা আখতার বলেন, আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীগুলো ক্যাবিনেটে তোলার জন্য। তবে রাজস্ব কমে যাবে—এই অজুহাতে প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি হাই-লেভেল কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং দুই দফা বৈঠকও করেছে। কিন্তু তামাক কোম্পানির লবিং এত শক্তিশালী যে অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।  

তিনি আরও বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো সবসময় ভয় দেখায় যে তামাক থেকে রাজস্ব আহরণ ছাড়া সরকার চলতে পারবে না। অথচ বাস্তবে তাদের প্রদেয় করের মধ্যেই বহু ফাঁকি রয়ে গেছে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তরুণ সমাজকে তামাকের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তরুণ প্রজন্ম সচেতন হলে কোনো তামাক কোম্পানি আর তাদের টার্গেট করতে পারবে না।

সভায় জানানো হয়, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর সাথে অধিক সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ বেশ কিছু সংশোধনীর প্রস্তাব দিয়েছে।  

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবগুলো হলো—পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বা স্মোকিং জোন নিষিদ্ধ করা, সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তরুণদের রক্ষা করা, বিড়ি-সিগারেট খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি (সিএসআর) নিষিদ্ধ করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র সতর্কবার্তা বাড়িয়ে ৯০ শতাংশে উন্নীত করা।

নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন তামাকবিরোধী মায়েদের ফোরাম, শিক্ষক ফোরাম, ইয়ুথ ফোরাম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

জিসিজি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।