ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকদের কোয়ার্টারের (আবাসিক) একটি ঘর থেকে তানজিনা জাহান মিথিলা (২৭) নামে এক নারী চিকিৎসকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢামেকের বার্ন ইউনিটের পেছনের ওই কোয়ার্টারের নিচতলার একটি ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করে শাহবাগ থানা পুলিশ।
মিথিলা সম্প্রতি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল থেকে ইন্টার্নশিপ শেষ করেন। তার স্বামী ডা. মিজানুর রহমান ঢামেকের মেডিসিন ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার। ১১ মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। মিথিলার বাড়ী কুমিল্লা সদরের মনোহরপুর ভিক্টোরিয়া কলেজের পাশে। তার বাবার নাম মো. ফিরোজ মিয়া।
ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ বাংলানিউজকে জানান, সহকারীদের কাছে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই আমরা। পরে মিথিলার মরদেহ দেখে বোঝা গেল বিকেলে চারটা থেকে পাঁচটার মধ্যে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
মৃতের কাছ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে লেখা ছিল, আমার জন্য এতো অসুখী আর কারোর হওয়ার দরকার নেই।
মেয়ের মরদেহের কাছে আহাজারি করতে করতে মিথিলার মা রোকেয়া বেগম ডা. মিজানুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তুমি সুখী হবা, তুমি অনেক বড় ডাক্তার হবা, তুমি আরেকটা বিয়ে করবা। কিন্তু আমি তো আমার মেয়েকে ফিরে পাব না। আমার মেয়ে আমাকে বলেছে, তোমার কাছে সে তিন দিন ধরে ফোন দেয়, কিন্তু তুমি ফোন রিসিভ করো না। তুমি কোন নির্বাচনে এত ব্যস্ত? এখন তুমি শান্তিতে নির্বাচন করো।
রোকেয়া বেগম জানান, মিথিলারা এক ভাই এক বোন ছিলেন।
শাহবাগ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আবদুল মান্নান বাংলানিউজকে জানান, খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে যায় পুলিশ। এরপর কোয়ার্টারের নিচতলার ঘরটি ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো নারী চিকিৎসকের ঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করি।
মিথিলার মামা শরীফ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, খবর পেয়ে ছুটে এসেছি। কী কারণে মিথিলা আত্মহত্যা করেছে, জানি না। এটা আত্মহত্যা, নাকি অন্য কিছু তা-ও জানি না।
মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঢামেকের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) খাজা আবদুল গফুরও ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি জানান, মরদেহটি এখন বার্ন ইউনিটে রাখা আছে।
ঢামেকের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সেন্টু চন্দ্র দাশও বিষয়টি জেনেছেন বলে বাংলানিউজকে জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৫/আপডেট: ০১৫৩ ঘণ্টা
এজেডএস/এইচএ/আরএইচ