ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এসেই পড়েছে শীত

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৫
এসেই পড়েছে শীত ছবি: জি এম মুজিবুর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: শীতল বাতাস। দিনের বেলায় রোদের উষ্ণতা কমে আসছে।

দিনের দৈর্ঘ্য ছোট হয়ে আসছে আর রাত বড় হচ্ছে। স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে।

হেমন্ত এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু আসি আসি করে শীত এসেই পড়েছে।

ঠাণ্ডা বাতাস আর কুয়াশা পড়তে শুরু করলেও রাজধানীতে এখনো জাঁকিয়ে বসেনি শীত। তবে বিভিন্ন স্থানে রাস্তার পাশে জনমানুষকে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।

কাঠ, খড়-পাতা আর বাঁশের টুকরো আগুনে পুড়ছে আর দু’হাত পেতে তাপ নিচ্ছেন রাতে ডিউটিরত কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী। সারা রাত জেগে থেকে ভবন পাহারার কাজ করছেন তারা। ঠাণ্ডা বাতাস ও কুয়াশা থেকে বাঁচতে সবাই পরেছেন শীতের কাপড়ও।

রোববার (১৫ নভেম্বর) দিনগত রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক রোডের কনকর্ড টাওয়ারের সামনে সরেজমিনে এ চিত্র দেখা গেছে।

ভবনের সামনে কাঠের টুকরো দিয়ে আগুন জ্বেলে অর্ধবৃত্তাকৃতি হয়ে বসে শীতল শরীরে উষ্ণতাপ নিচ্ছেন নিরাপত্তাকর্মী শাহাবুদ্দিন, মুজিবুর ও দয়াজাল প্রামাণিক।

শাহাবুদ্দিন (২০) বললেন, ‘ঠাণ্ডায় ডিউটি করতে কষ্ট হয়। তাই আগুন জ্বালাইয়া একটু শরীর গরম করতাসি। সারা রাইত(রাত) জাগনা থাকতে হইবো। সকাল ৬টা পর্যন্ত ডিউটি। পরের শিফটের গার্ড আইলে ঘুমাইতে যামু আমরা’।

শাহাবুদ্দিনের বাড়ি চাঁদপুরের কাচুয়া গ্রামে। তিন মাস ধরে তিনি কনকর্ড টাওয়ারে নিরাপত্তাকর্মীর কাজে যোগ দিয়েছেন। পরিবারের সদস্য ৭ জন। ৫ ভাই-বোনের মধ্যে শাহবুদ্দিন দ্বিতীয়। সবাই চাঁদপুরেই থাকনে।

‘পেটের দায়ে ঢাকা আইছি। আমার মামার মাধ্যমেই এই কোম্পানিতে সিকিউরিটি গার্ডের কাজ পাইছি। সংসারে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করনের জন্যই আমি পড়ালেখা বাদ দিয়া কাজে নামছি – বললেন শাহাবুদ্দিন।

পড়াশোনার কতোটুকু জানতে চাইলে তিনি বলেন, অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পরছি। নবম শ্রেণিতে উঠতে পারি নাই। আমার বড় বোন আর ছোট দুই ভাই পড়াশোনা করে।

অন্য নিরাপত্তাকর্মী দয়াজাল প্রামাণিক(৭০) বলেন, ‘বুড়া হইয়া গেছি, শরীরে আর কুলায় না। এখনও কাজ করে খাই। শীত আসলো, এই সময় রাতে ডিউটি করতে বড় কষ্ট হয়। তাই আগুন পোহাইতাছি’।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাতে বনানীর কামাল আতাতুর্ক রোডটি একেবারেই জনমানুষশূন্য। গাড়ির শব্দ নেই, কিন্তু আছে ঠাণ্ডা বাতাসের শব্দ। এর মধ্যেই রাস্তার পাশে আগুন জ্বেলে আলাপচারিতার সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতাপ নিচ্ছেন এসব  নিরাপত্তাকর্মীরা।

বাংলাদেশ সময়: ০১৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৫
এসজেএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।