গাজীপুর: গাজীপুরে তিন মাসের কন্যাশিশুকে হত্যার দায়ে বাবা সোহেল রানাকে (২৮) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম এনামুল হক এ রায় দেন।
একই সঙ্গে আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন তিনি।
সোহেল রানা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের লাঠিভাঙ্গা গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে তিনি।
গাজীপুর জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দিন আহমদ বাংলানিউজকে জানান, ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর শিশু সোহানাসহ স্ত্রী রাবেয়া আক্তারকে নিয়ে সোহেল রানা তার নানা শ্বশুরবাড়ি গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় বেড়াতে যান। সেখানে পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রী কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওই দিন দুপুরে রাবেয়া তার তিন মাসের মেয়ে শিশু সোহানা আক্তারকে রেখে বাথ রুমে গেলে কৌশলে সোহেল রানা তার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে কড্ডা ব্রিজের উপর থেকে তিন মাসের মেয়ে সোহানাকে তুরাগ নদীর পানিতে ছুড়ে ফেলে চলে যায়।
পরদিন সকালে সোহেল রানা কড্ডা ব্রিজের নীচে নদীতে নেমে মেয়েকে খুঁজতে থাকে। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা নদীর পানিতে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে সন্দেহজনকভাবে সোহেল রানাকে এলাকাবাসী আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তার শিশু হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এ ঘটনায় রাবেয়ার ভাই আসাদুল হক বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন। পরে সোহেল রানাকে গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হলে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
জয়দেবপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর সোহেল রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ১০জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে সোমবার গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম এনামুল হক ওই রায় দেন।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি হারিছ উদ্দিন আহামদ, আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহজাহান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৫
ওএইচ/এসএইচ