ঢাকা: ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে রাজধানীর গুলশান-২ এর পিংক সিটি শপিং কমপ্লেক্সের বেইজমেন্টে পার্কিংয়ের জায়গায় স্থাপিত দোকান উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে রাজউক। সোমবারের (১৬ নভেম্বর) অভিযান চলাকালে মার্কেট কর্তৃপক্ষ অঙ্গীকারনামা দিয়েছে, মঙ্গলবারের (১৭ নভেম্বর) মধ্যে এসব অবৈধ দখল উঠিয়ে নিয়ে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা তৈরি করে দেবে।
এ কারণে সোমবার উচ্ছেদ অভিযান শেষ করেছে রাজউক। সংস্থাটি জানিয়েছে, মঙ্গলবারের মধ্যে মার্কেট কর্তৃপক্ষ তাদের করা অঙ্গীকারনামা অনুসারে এসব অবৈধ দখল উঠিয়ে নিয়ে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা তৈরি করে দিলে আর উচ্ছেদ অভিযান চলবে না এখানে। তারা সেটি না করলে ফের উচ্ছেদ অভিযান চলবে।
রাজধানীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে প্রশাসনের নিদের্শে রাজউক কর্তৃক পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার জাকির হোসাইন।
রাজউক জোন-৪ এর পরিচালক সওদাগর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রীর নির্দেশে রাজধানীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। রাজধানীজুড়ে মাসব্যাপী এ অভিযান চলবে। প্রয়োজন হলে এক মাসেরও বেশি সময় অভিযান চলবে।
অভিযান শুরু হয় সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায়। অভিযানে সহযোগিতা করে গুলশান থানা পুলিশ। অভিযানের শুরুতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পিংক সিটি শপিং কমপ্লেক্সের বেইজমেন্টে প্রবেশ করে গুলশান শাড়ি মিউজিয়াম এবং টপ টেন ফেব্রিক্স অ্যান্ড টেইলার্সকে ৩০ মিনিট সময় বেধে দেন শো-রুমের ভেতরে থাকা মালামাল সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। পরে ম্যাজিস্ট্রেট একই ভবনের অপর পাশে প্রবেশ করে দেখেন, সেখানেও গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা দখল করে খেয়াল-খুশিমতো নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করছেন মার্কেট কর্তৃপক্ষ।
এ অবস্থায়ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এক ঘণ্টার মধ্যে মালামাল সরিয়ে নিয়ে যেতে নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্টদের। বেইজমেন্টে অবস্থিত মসজিদটিকে সরিয়ে ছাদে বা অন্য কোথাও নিয়ে যেতেও বলেন। কিন্তু পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট ভবন কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ে মালামাল সরিয়ে না নিলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে আসা শ্রমিকদের লাগিয়ে দেওয়া হয় ওইসব দেয়াল ভেঙে দিতে।
উচ্ছেদের আগে ভবনের ম্যাপ দেখে কোন কোন স্থান উচ্ছেদের আওতায় আসবে তা নির্ধারণ করেন রাজউকের কর্মকর্তা জোন-৪ এর পরিচালক সওদাগর মোস্তাফিজুর রহমান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এর পরেই শুরু হয় উচ্ছেদ প্রক্রিয়া।
পরে ম্যাজিস্ট্রেট ভবনের এমডির কাছ থেকে স্বাক্ষরসহ অঙ্গীকারনামা নিয়ে ঘোষণা দেন, মঙ্গলবারের মধ্যে এসব অবৈধ দখল উঠিয়ে নিয়ে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা তৈরি করে দেবে ভবন কর্তৃপক্ষ। এতে করে মার্কেটের ক্রেতারা ভবনের আশপাশে গাড়ি পার্কিং করবেন না। ফলে ওই স্থানে যানজট নিরসন হবে।
তিনি আরো বলেন, মঙ্গলবারের মধ্যেই ভবন কর্তৃপক্ষ নিজেরা দখল অপসারণ করে সংশ্লিষ্ট এলাকার রাজউকের অফিসে অবহিত করবে। পরে রাজউকের ইন্সপেক্টর এসে সেটি পরিদর্শন করে রিপোর্ট দেবেন। এতে কোনো অনিয়ম হলে ফের উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে বলে উল্লেখ করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
‘দ্বিতীয়বারের মতো অভিযান চালাতে প্রয়োজন হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে আরো কঠোর হবো, প্রয়োজনে উচ্ছেদের পাশাপাশি জরিমানাও করা হবে’ বলে ভবন কর্তৃপক্ষকে সাবধান করে দেন উপস্থিত রাজউক জোন-৪ এর পরিচালক সওদাগর মোস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৫
এনএইচএফ/আরএ/এএসআর