ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘শুধু অনুদান নয়, বিচার চাই’

নুরুল আমিন ও শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
‘শুধু অনুদান নয়, বিচার চাই’ ছবি: দীপু মালাকার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ‘দেড় বছরের ছেলে ফয়েজকে নিয়ে খুব সুখের সংসার ছিলো। কিন্তু আজ স্বামী নেই।

কেমন আছি শুধু আমিই জানি। তার জীবনের বিনিময়ে আজ আমরা অনুদান পেলাম। তবে শুধু অনুদান নয়, স্বামী হত্যার বিচার চাই’।
 
আবেগে-আপ্লুত হয়ে কথাগুলো বললেন নিহত হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল মো. জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী মোসা. সানজিদা বেগম।
 
চলতি বছরে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সানজিদার স্বমীর মতো জীবন দিয়েছেন আরো ৫৮ পুলিশ সদস্য। তাদের মধ্যে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়েছেন ১৪ জন।
 
গত ২৩ আগস্ট বরিশালের গৌরনদী হাইওয়ে থানা এলাকায় ডিউটিরত অবস্থায় জাহিদ মারা যান।

সানজিদা বাংলানিউজকে বলেন, ‘জীবনে আমি যা হারিয়েছি তা তো আর ফিরে পাবো না। তবে আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই’।
 
নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জানান, পুলিশ সদস্য নিহতের এসব ঘটনায় দায়েরকৃত অধিকাংশ মামলায় তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। নিহতদের পরিবারগুলোর দাবি, শুধু আর্থিক অনুদান নয়, হত্যার উপযুক্ত বিচার চায় তারা।
 
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে দায়িত্ব পালনকালে নিহত হন ১২০ জন পুলিশ সদস্য। ২০১৩ সালে নিহত হন আরো ১০২ জন।
 
সোমবার (১৬ নভেম্বর) পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গত তিনমাসে দায়িত্ব পালনকালে নিহত ১৪ পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে আর্থিক অনুদান ও শোকবার্তা প্রদান করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক।
 
অনুষ্ঠানে আসা নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের আর্থিক অনুদান দেওয়ার সময় সবাই আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন।

‘আমার ছোইল (ছেলে) মরে গেচে (গেছে), আর্থিক অনুদান পাছি (পেয়েছি), কিন্তু হত্যাকারীদের বিচের (বিচার) হইচ্ছে না। হামি (আমি) ওই খুনিগো বিচের (বিচার) চাচ্ছি (চাই)। ’ - ক্ষোভ প্রকাশ করে কথাগুলো বললেন আশুলিয়ার ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-১ এর নিহত কনস্টেবল মো. মুকুল হোসেনের (২৩) বাবা মো. সহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘মরার দু দিন আগে হামার (আমার) ছোইল বাড়িতে ফোন করি কইচ্ছিলো, -‘বাবা দোয়া কইরো, আমার ডিএমপিতে পোস্টিং হইছে, দুইদিন বাদে যাচ্ছি (যাবো)। কিন্তু খুনিরা হামার (আমার) ছোইলরে (ছেলে) মারিলো। আমি ওই খুনিগো বিচের চাই’।
 
নিহত মুকুলের বাবা জানান, তারা বগুড়ার শিবগঞ্জ রহবল গ্রামে থাকেন। পরিবারে তার দুই ছেলে দুই মেয়ে, মুকুল সবার বড়। মুকুল রংপুরের কারমাইকেল কলেজে পড়েছেন। পুলিশে মুকুলের  চাকরির বয়স ছিল তিন বছর।
 
নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে অনুদান দেওয়ার পর পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, যে সকল পুলিশ সদস্য দায়িত্বরত অবস্থায় জীবন দিয়েছেন, পুলিশ প্রশাসন তাদের কাছে চিরঋণী। নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের পাশে আমরা সব সময় আছি, থাকবো।
 
তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যদের যারা হত্যা করেছে তাদের অনেককেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সদসদের হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
এনএ/এসজেএ/এএসআর

** ‘সরকারের কাছে একটি চাকরি চাই’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।