ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘দণ্ড বহাল থাকবে’, ‘আদালত পুর্নবিবেচনা করবেন’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
‘দণ্ড বহাল থাকবে’, ‘আদালত পুর্নবিবেচনা করবেন’ মাহবুবে আলম ও খন্দকার মাহবুব হোসেন

ঢাকা: মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে। শুনানি শেষে বুধবার (১৮ নভেম্বর) আদেশের দিন ধার্য করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।



রিভিউ শেষে সর্বোচ্চ আদালত তার ফাঁসির রায় বহাল রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে আদালত ফাঁসির বিষয়টি আইনিভাবে পুনর্বিবেচনা করবেন বলে মনে করছেন মুজাহিদের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।

মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অপর বিচারপতিরা হলেন, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।


এদিন সকাল ৯টা ১০ মিনিট থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আসামিপক্ষে শুনানি শেষ করেন মুজাহিদের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। আর বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তার বক্তব্যের জবাবে ফের সমাপনী শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন।

পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন উভয়পক্ষের প্রধান আইনজীবী। আদালত মুজাহিদের বিরুদ্ধে রায় বহাল রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে ফাঁসির আদেশ হয়েছে একাত্তরের কিলিং স্কোয়ার্ড আলবদর বাহিনীর প্রধান মুজাহিদের। আসামিপক্ষ রিভিউ শুনানিতে দাবি করেছেন, মুজাহিদ আলবদর প্রধান বা বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত ছিলেন না।  

এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ঢাকার মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে বুদ্ধিজীবীদের ওপর রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর নির্যাতনের সঙ্গে মুজাহিদের সম্পৃক্ততা ছিল।

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা আরও বলেন, মুজাহিদ সেই সময় আলবদর বাহিনীর নেতা ছিলেন। তিনি বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছেন। বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য আলবদরদের উজ্জীবিত করেছেন, উসকানি দিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীদের নিশ্চিহ্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যাপারে সরাসরি তাকে হত্যা করতে হবে এটা কোনো কথা না, তিনি এ ব্যাপারে প্ল্যান করেছেন, উৎাহিত করেছেন তার সহকর্মীকে উজ্জীবীত করেছেন।   এটাও বিরাট অপরাধ। এসব বিষয় বিবেচনা করে, আদালত সঠিকভাবেই আপিলের রায়ে তার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। আমরা আশা করি, আপিল বিভাগের রায় বহাল থাকবে।

আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, যেসব সাক্ষীর ওপর ভিত্তি করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তা বেআইনিভাবে হয়েছে। এজন্য এ রায়ের পুর্নবিবেচনার আবেদন জানানো হয়েছে। আদালত আমাদের বক্তব্য ধৈর্য সহকারে শুনেছেন। আদালত বিষয়টি আইনিভাবে বিবেচনা করবেন এবং বুধবার আদেশের জন্য রেখেছেন।

মাহবুবে আলম বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যায় তখনকার আলবদর বাহিনী বা বর্তমান জামায়াত-শিবিরের অবস্থান একই। তারা এখনও বুদ্ধিজীবীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন,  দেশের বুদ্ধিজীবীদের ওপর জামায়াতের যে আক্রোশ, তা আজও শেষ হয়নি। এ জন্যই অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, হাসান আজিজুল হককে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। নিরাপত্তা চেয়ে তাদের আইনের আশ্রয় নিতে হয়। যদি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা কমানো হয়, তাহলে দেশবাসী হতাশ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
আরএইচএস/আরএইচ/এএসআর

** নিজামীর আপিল শুনানি ফের বুধবার
** মুজাহিদের রিভিউ শুনানি শেষ, আদেশ বুধবার
** সাকার রিভিউ শুনানি পিছিয়েছে
** রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ, জবাব দিচ্ছেন আসামিপক্ষ
** আসামিপক্ষের শুনানি শেষ, রাষ্ট্রপক্ষের শুরু
** মুজাহিদের রিভিউ শুনানি চলছে
** মুজাহিদ-সাকা চৌধুরীর রিভিউ শুনানি কার্যতালিকায়
** নিজামীর আপিল শুনানি কার্যতালিকায়

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।