ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কাশিমপুর কারাগারে নূর হোসেনকে দুদকের নোটিশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
কাশিমপুর কারাগারে নূর হোসেনকে দুদকের নোটিশ

ঢাকা: ট্রাক চালকের সহকারী থেকে বিশাল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের কাছে কারাগারে সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর কাশিমপুর কারাগার-২ এ নোটিশটি পাঠায় দুদক।

নোটিশের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করে দুদক সুত্র জানায়, নূর হোসেনের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জে নূর হোসেনের বাড়িতে তার স্ত্রীর সম্পদের হিসাব চেয়েও নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে সামান্য ট্রাক হেলপার থেকে কোটি কোটি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন নূর হোসেন এমন অভিযোগ রয়েছে।

নোটিশে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে দুদকের কাছে সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিতে বলা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, নোটিশ পৌঁছার পর কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক।

নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনার পর তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন না করায় পুলিশের বিরুদ্ধে নানা সমালোচনা হচ্ছে। রিমান্ডে নেওয়া যাবে কি যাবে না—সে বিষয়েও বিতর্ক হচ্ছে। এর মধ্যেই দুদক তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারির সিদ্ধান্ত নেয়।

২০১৪ এর এপ্রিলের নারায়ণগঞ্জের কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে হত্যার পর নূর হোসেন পালিয়ে গেলে ২৯ মে তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক। পরে এই অনুসন্ধান কার্যক্রম অনেকটা্ই স্থবির হয়ে পড়েছিল।

দুদক সূত্র জানায়, দেড় বছরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত এই কাউন্সিলরের প্রায় আট কোটি টাকার সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

জাতীয় পার্টির মাধ্যমে রাজনীতিতে আসা নূর হোসেন পরে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর তিনি যোগ দেন এই দলে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হওয়ার পাশাপাশি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতিও ছিলেন নূর হোসেন।

ট্রাকচালকের সহকারী থেকে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিশাল সম্পদ গড়ার অভিযোগ নূর হোসেনের বিরুদ্ধে।

বিভিন্ন থানার নথি থেকে জানা যায়, ২০১০ সালে হাই কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে শীতলক্ষ্যার তীর দখল করে বালু-পাথরের ব্যবসা গড়ে তোলায় নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করে বিআইডব্লিউটিএ।

সরকারি কাজে বাধা, সরকারি কর্মকর্তাদের হুমকি দেওয়া এবং নদীতীরের প্রায় ৮০০ শতাংশ জমি দখলেরও অভিযোগ আনা হয় ওই মামলায়।

ওই জমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে আট-দশবার অভিযান চালানো হলেও নূর হোসেন ও তার সমর্থকদের বাধার মুখে সেসব অভিযান সফলতার মুখ দেখেনি।

গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে কাঁচপুর সেতুর নিচে বালু-পাথরের অবৈধ ব্যবসা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তা আবার চালু হয়।

নূর হোসেনের নেতৃত্বে শিমরাইল-কাঁচপুরে বিভিন্ন পরিবহন থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ সিটি করপোরেশন ট্রাক টার্মিনালে মেলার নামে জুয়ার আসর বসানো ও মাদক বিক্রির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১১ ঘন্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
এডিএ/এমএমকে


বাংলাদেশ সময় ১৪১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।