খাগড়াছড়ি: বিল্ডিংয়ের ছাদ, রাস্তার মোড়, স্মৃতি ভাস্কর্যসহ খাগড়াছড়ি শহরের সব জায়গা দখল করে নিয়েছে বিলবোর্ড। বিজ্ঞাপনী প্রচারণায় স্থাপিত এসব বিলবোর্ডে ঢাকা পড়েছে খাগড়াছড়ি শহর।
ছোট এ পর্যটন শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো বিলবোর্ডের আধিপত্যে বিরক্ত স্থানীয়রা। তবে, বিলবোর্ডের অনুমোদন দানকারী পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, বিল বোর্ডের সঙ্গে শর্ত আরোপ করে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
পৌরসভার লাইসেন্স শাখা থেকে জানা যায়, শহরের বাস স্টেশন থেকে শহীদ কাদের সড়ক ও মাস্টার পাড়া মোড় পর্যন্ত বিল বোর্ডের সংখ্যা ১৯টি। এর মধ্যে জিয়া ভাস্কর্যের সামনে একটি, মাস্টার পাড়া ও নারিকেল বাগান এলাকায় মূল সড়কের মধ্যে দু’টি, চেঙ্গী স্কয়ার এলাকায় দু’টি বড় বিলবোর্ড নির্মাণাধীন। এছাড়া খাগড়াছড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মুক্তমঞ্চের উপর একটিসহ আরো বেশ কয়েকটি বিলবোর্ড নির্মাণের অপেক্ষায় রয়েছে।
তবে, ছোট্ট শহরে এতো বিলবোর্ডের বিষয়টি ভালোভাবে দেখছেন না স্থানীয়রা। অনেকে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করছেন। অনেকে আবার অভিযোগ করে বলছেন বিলবোর্ডের কারণে খাগড়াছড়ি শহরের আসল সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।
সমাজকর্মী বাঁশরী মারমা ও নমিতা চাকমা বলেন, খাগড়াছড়ি ছোট শহর। এই শহরের চারপাশে এখন শুধু বড় বড় বিলবোর্ড চোখে পড়ে। আর এ কারণে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। শহরে এখন বিলবোর্ডের আধিপত্য বেশি চোখে পড়ছে।
বিনোদন ত্রিপুরা ও ইসরাফিল বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রামে মূল সড়কে কিংবা সড়কের পাশে যে বড় বড় বিলবোর্ড চোখে পড়তো -এখন তা খাগড়াছড়িতে দেখা যাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সৌন্দর্য বিলবোর্ডে ঢাকা পড়ছে। তাছাড়া রাস্তার মধ্যে কিংবা রাস্তার পাশ থেকে এক খুঁটিতে ঝুলানো বিলবোর্ডগুলো যেকোন সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলেও তারা আশঙ্কা করছেন।
এদিকে ঢাকা থেকে সাজেকে ঘুরতে আসা পর্যটক দম্পতি নজরুল ইসলাম ও তাবাসসুম জোহরা বলেন, এর আগে যখন খাগড়াছড়ি এসেছিলেন তখন এতো বিলবোর্ড ছিলনা। এখন একটু পথ গেলেই ডানে বামে বড় বড় বিলবোর্ড দেখা যাচ্ছে। এতে শহরের আসল সৌন্দর্য ঢাকা পড়েছে।
তবে খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলমের দাবি সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিল বোর্ডের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, মালিকপক্ষ দু’টি বিলবোর্ডের সঙ্গে যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করছে। এতে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। আর অন্য বিলবোর্ডগুলো শহরের সৌন্দর্যে ব্যাঘাত ঘটাবে না।
সব কাজের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক আছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বিলবোর্ডের কারণে শহরে জনসাধারনের দুর্ভোগ সৃষ্টি হবেনা।
স্থানীয় বাসিন্দারা শহরের সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রাখার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে পথচারীদের বিপদের কারণ হতে পারে এমন বিল বোর্ড অপসারণে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৫
এমজেড