ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিলুপ্ত ছিটমহল

অবকাঠামো উন্নয়নে ১৯৫ কোটি টাকার প্রকল্প

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৫
অবকাঠামো উন্নয়নে ১৯৫ কোটি টাকার প্রকল্প ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: ছিটমহলগুলো বিলুপ্ত হওয়ায় পর এসব অঞ্চলের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ১৯৫ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে দীর্ঘ ৬৮ বছর পর বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর ভাগ্যে মিলছে প্রকল্প।

 

‘বিলুপ্ত ছিটমহলসমূহের অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর(এলজিইডি)।

এলজিইডি সূত্র জানায়, বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পরিবহন ব্যয় কমবে, কৃষি এবং অ-কৃষি পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সুবিধাদি বৃদ্ধি পাবে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার বিভাগ সার্বিকভাবে প্রকল্পটির দেখভাল করবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম-সচিব রইছ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর পিছিয়ে পড়া জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় উপজেলা, ইউনিয়ন, গ্রাম সড়কসহ ছোট ছোট কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, হাট-বাজার, কবরস্থান, মন্দির ও শ্মশানঘাট নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কমিউনিটি সেন্টার, খাল, ঘাট ও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ করা হবে।
 
গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করাও প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।

২০১৬ সালের শুরু থেকে ২০১৮ সালের জুন মেয়াদে এলজিইডি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

চারটি জেলার ১২টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ, বোদা ও সদর, কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী, ভুরুঙ্গামারী, চিলমারি, সদর, রাজিবপুর ও রৌমারি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

অন্যদিকে নীলফামারী জেলার ডিমলা, লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা, সদর ও পাটগ্রাম উপজেলাকে প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় বিলুপ্ত ছিটগুলোতে একগুচ্ছ কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। কার্যক্রমগুলো হলো, ৬ দশমিক ৩০ কিলোমিটার উপজেলা সড়ক, ১৭ দশমিক ১৯ কিলোমিটার ইউনিয়ন সড়ক এবং ১৬৭ দশমিক ৮২ কিলোমিটার গ্রাম সড়ক ‍উন্নয়ন করা করা।

এছাড়া, ২৩ দশমিক ১৮ কিলোমিটার মাটির সড়ক উন্নয়নের পাশাপাশি ইউনিয়ন সড়কে ২৭ মিটার কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। গ্রাম সড়কে ৬৮৪ মিটার কালভার্ট নির্মাণের কাজ করা হবে।

এর পাশাপাশি ১২টি মার্কেট, গ্রোথ সেন্টার, ১৫টি মসজিদ, আটটি কমিউনিটি সেন্টার, সাতটি মন্দির, আটটি পুকুর ঘাট, সাড়ে ১০ কিলোমিটার খাল, চারটি কবর স্থান ও তিনটি শ্মশানঘাট নির্মাণ করা হবে।

২৩০ কিলোমিটার স্লোপ প্রটেকশনসহ বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে তিনটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ করা হবে।
 
ভারতে অবস্থিত সাবেক ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। ১৯৪৭ সালের পর থেকে দীর্ঘ ৬৮ বছর সাবেক ওই ছিটমহলগুলোতে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। প্রকল্পের আওতায় এই প্রথম বিলুপ্ত ছিটমহলে লাগতে যাচ্ছে উন্নয়নের ছোঁয়া।

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৫
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।