কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় মহাসড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া সেই নবজাতক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে ঢাকার মোহাম্মদপুর কেয়ার হাসপাতালে শিশুটি মারা যায়।
জীবন বাঁচাতে শিশুটির দত্তক প্রত্যাশী দম্পতি আল আমিন ও সুমি বেগম সোমবার মধ্য রাতে ঢাকায় নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য। এর আগে শনিবার (১৪ নভেম্বর) রাতে কোনো এক সময়ে ফুটফুটে এ নবজাতকটির জন্ম হলে সদর উপজেলার বিসিক শিল্পনগরী এলাকার কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখে যায় তার মা।
রোববার সকালে রাস্তার পাশে কান্না শুনতে পেয়ে স্থানীয়রা নবজাতকটিকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। উদ্ধারের পর চিকিৎসা শুরু হলে বিকেলে শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য সুমি নামে এক নারীকে লিখিত দায়িত্ব দিয়ে রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করে।
রাজশাহী রওয়ানা হওয়ার আগেই শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে বেসরকারি সনো প্রাইভেট হসপিটালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে সোমবার বিকেলে শ্বাস-প্রশ্বাসে সম্যসা আর খিচুনি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শ্যামলী শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দ্রুত লাইভ সাপোর্টে রাখার পরামর্শ দেন। কিন্তু সে সময় শিশু হাসপাতালে লাইভ সাপোর্ট খালি না থাকায় শিশুটিকে মোহাম্মদপুর কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসার এক পর্যায়ে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন।
শিশুটির দত্তক প্রত্যাশী আল আমিন বাংলানিউজকে জানান, রাত ১১টার দিকে শিশুটি মৃত্যুবরণ করেছে। তিনি সেসয়ম বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, তার স্ত্রী সুমি এখন পাগলপ্রায়।
নবজাতক উদ্ধারের পর থেকে নিজের সন্তানের মত করে অপার মমতায় দেখভাল করিছিলেন সুমি বেগম। বিয়ের ৯ বছর পার হলেও আল আমিন মিয়া ও সুমি বেগম দম্পত্তির সংসারে কোনো সন্তান আসেনি।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জমির উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, জন্মের পর থেকে মায়ের বুকের দুধ ও পরিচর্যা না পাওয়ায় শরীরে নানা জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এছাড়া মায়ের বুক দুধ না পাওয়ার কারণেও সমস্যা হয়েছে। শীতে খোলা জায়গায় পড়ে থাকায় বিশেষ করে শ্বাস কষ্ট হয়েছে। এসব কারণেই শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৫
এসএইচ