ঢাকা: সর্বোচ্চ আদালত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় বহাল রাখার পর এ দুই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর রায় কার্যকর হবে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুসারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, আইনি নির্দেশনা মেনেই রায় কার্যকর করবে সরকার।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের নিজ দফতরে এ কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সকালে অধ্যক্ষ নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যাসহ চার হত্যা-গণহত্যার দায়ে সাকা চৌধুরী এবং একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে মুজাহিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
রিভিউ খারিজের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রিভিউ খারিজের আদেশের কপি এলে আইন অনুযায়ী রায় কার্যকর করা হবে। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সময় রয়েছে। আইন মেনে সব ঠিকঠাক করে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
এ রায়ের প্রতিবাদে জামায়াতের হরতাল ডাকা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জামায়াত এখনও রাজনৈতিক দল হিসেবে রয়েছে। তারা হরতাল দিতেই পারে। তবে জামায়াতের হরতাল জনগণ মানেনি। এখনও বিএনপির অবরোধ চলছেই। তারা অফিসিয়ালি অবরোধ প্রত্যাহার করেনি।
জামায়াতকে কেনো নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আদালতে মামলা রয়েছে। আদালতের মাধ্যমেই আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।
দেশের আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভালো আছে, আমেরিকার চেয়েও ভালো আছে। তবে দু’একটি অপচেষ্টা হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকানো ও অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে দেশকে অস্থিতিশীল করতে।
গত ১ অক্টোবর মুজাহিদ-সাকার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই কারাগারে লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানা ও ফাঁসির চূড়ান্ত রায় পড়ে শোনানো হয় তাদেরকে। আগেরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর ওই দু’জনের আপিল খারিজ করে ফাঁসি বহাল রেখে সর্বোচ্চ আদালতের প্রকাশ করা পূর্ণাঙ্গ চূড়ান্ত রায়ের ভিত্তিতে এ মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন বিচারিক আদালত।
গত ১৪ অক্টোবর রিভিউ আবেদন করার পর থেকে মৃত্যু পরোয়ানা স্থগিত ছিল। বুধবার রিভিউ খারিজ হওয়ায় ফের সচল হয়েছে এ পরোয়ানা। এখন মুজাহিদ ও সাকাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকরের বিষয়টি সম্পূর্ণ সরকারের এক্তিয়ারাধীন।
তবে সর্বশেষ সুযোগ হিসেবে এখন কেবলমাত্র রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন আসামিরা। প্রাণভিক্ষা না চাইলে বা চাওয়ার পর আবেদন নাকচ হলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর কোনো আইনি বাধা থাকবে না।
আইন অনুসারে তখন সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যেকোনো সময় মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করবে কারা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে দুপুরেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বৈঠক করেছেন উর্ধ্বতন কারা কর্মকর্তারা। রায় বহাল পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা নির্ধারণ ও ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি নিতে এ বৈঠকে অংশ নেন আইজি প্রিজন ব্রি. জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার, সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবিরসহ কেন্দ্রীয় কারাগারের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৫
এসএমএ/এএসআর
** ঊর্ধ্বতন কারা কর্মকর্তাদের বৈঠক
** শেষ দিনেও সাকার ভুয়া সার্টিফিকেট!
** দেশ স্থিতিশীল করতেই ফেসবুক সাময়িক বন্ধ
** মুজাহিদের ফাঁসি বহাল
** সেই ‘ল্যাংড়ার’ সাক্ষ্যে ফাঁসিকাষ্ঠে যাচ্ছেন সাকা
** মুজাহিদের বাড়ি এখন পোকা-মাকড়ের বাসা
** ‘মুজাহিদও ক্ষমা চাইবেন না’
** ‘ক্ষমা চাওয়ার পারিবারিক সিদ্ধান্ত নেই’
** মুজাহিদের রিভিউ আদেশে ফরিদপুরে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা
** মুজাহিদের রিভিউ আদেশে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা সিলেটে
** খুলনায় সর্তকাবস্থায় পুলিশ
** সাকার ফাঁসি বহাল
** ‘রায় যাতে দ্রুত কার্যকর হয়...’
** মুখ খুলছে না বিএনপি নেতারা
** সাকা’র সম্পত্তি ক্রোক চান সাক্ষী নূরুল আবসার
** বগুড়ায় সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী
** ‘রায় হয়েছে, দ্রুত কার্যকর হোক’
** সাকা’র সমর্থকদের সাড়া নেই, চলছে আনন্দ উল্লাস
** সাকার বাড়ি ফাঁকা!
** ‘টর্চার সেলকে জাদুঘর হিসেবে দেখতে চাই’