জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের সরাসরি অংশগ্রহণের বিধান কার্যকর করতে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত চারটি বিল পাশের সুপারিশ করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সংসদে উত্থাপিত এ সংক্রান্ত বিলগুলোতে মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) রাতে সংসদে বিলগুলোর ওপর প্রতিবেদন জমা দেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। এর আগে গত সোমবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিলগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। বিলগুলো হচ্ছে- স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) বিল-২০১৫, স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) (সংশোধন) বিল-২০১৫, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) বিল-২০১৫ এবং স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) বিল ২০১৫।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিটি নির্বাচনই উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এসব নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে হলেও বাস্তবে প্রতিটি দলই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দলীয় ব্যক্তিকে প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দিয়ে থাকে। এ প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিন থেকে জনগণ ও জনপ্রতিনিধিরা রাজনৈতিক পরিচয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। জনগণের প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিয়ে এবং জনপ্রতিনিধিদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার পালনের সুযোগ দিতে এসব বিল আনা হয়েছে।
বিলে আরও বলা হয়েছে, এ উদ্যোগের ফলে প্রার্থীদের দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি পাবে এবং যথাযথভাবে রাজনৈতিক অঙ্গীকার পালনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে জনগণকে আরও বেশি সেবা দিতে তৎপর থাকবেন। এক্ষেত্রে মনোনয়ন প্রদানকারী রাজনৈতিক দল তাদের নীতি ও আদর্শ বাস্তবায়নে এবং জনস্বার্থ প্রতিপালনে তার কর্মকাণ্ড নজরদারির আওতায় রাখতে পারবে।
এদিকে, বিলের লক্ষ্য ও উদ্দেশের সঙ্গে একমত প্রকাশ করলেও একটি ধারার বিরোধীতা করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সংসদ সদস্যরা। পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, পৌরসভা বিলে মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা মনে করি সব পদেই দলীয় পদে নির্বাচন হোক। তা না হলে বিলের উদ্দেশ্য পূরণ হবে না।
তিনি আরও বলেন, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আমরা এই প্রস্তাব তুলে ধরে ছিলাম। বিলটি পাসের সময় সংশোধনী প্রস্তাব জমা দেবো। সংসদ এই প্রস্তাব গ্রহণ করবে বলে আমরা আশা করি।
বুধবার রাতে সংসদ ভবনের সাংবাদিক লাউঞ্জে আলাপকালে অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহসহ দলের অন্যান্য সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চা শ্রমিকদের নিয়ে নতুন বিল
চা শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের ধারাবাহিকতা রক্ষা ও এই ধরনের কার্যক্রমকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনতে চা শ্রমিক ক্যলাণ তহবিল আইন-২০১৫ নামে নতুন একটি বিল আনা হয়েছে। গতকাল বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন। পরে তা পরীক্ষা-নীরিক্ষা করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদয়ী স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকা এবং দেশের অভ্যন্তরে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে শ্রমিকদের কর্মদক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করা জরুরি। এছাড়া শ্রমিকদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে চা শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৫
এসএম/এসকে/আইএ