ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পলিব্যাগ বন্ধে ৩০ নভেম্বর থেকে সাঁড়াশি অভিযান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৫
পলিব্যাগ বন্ধে ৩০ নভেম্বর থেকে সাঁড়াশি অভিযান ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: পলিব্যাগের ব্যবহার বন্ধে আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান চালাবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। আর এই অভিযানে সরকারের সকল দফতর ও প্রশাসন অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম।



রোববার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সমন্বয় সভায় তিনি এ তথ্য জানান।

মির্জা আজম বলেন, ২০১০ সালে পণ্যে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার আইন হলেও তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। মানুষকে সচেতন হতেই সময় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন সময় এসেছে আইনটি বাস্তবায়নের।

বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে ছয়টি পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সারাদেশে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে। এই পণ্যগুলো হলো- ধান, চাল, গম, ভূট্টা, সার ও চিনি।

এক সপ্তাহব্যাপী এই অভিযান চলবে বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক, চাল উৎপাদনকারী এলাকা, ঢাকার প্রবেশমুখে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন, নৌ-পরিবহন, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, পাট অধিদফতর, স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও ৠাব সাঁড়াশি অভিযানে সহায়তা করবে বলে যোগ করেন তিনি।

৩০ নভেম্বর থেকে পলিব্যাগ পাওয়া গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে মির্জা আজম বলেন, আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার না করে কৃত্রিম মোড়ক দ্বারা কোনো পণ্য বা পণ্য সামগ্রী মোড়কজাতকরণ, বিক্রয়, বিতরণ বা সরবরাহ করলে বা করবার অনুমতি প্রদান করলে তিনি অনুর্ধ্ব এক বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সকল তফসিলি ব্যাংককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনো উদ্যোক্তা পাটের ব্যাগ ব্যবহার না করে পলি ব্যাগ ব্যবহার করলে তার ঋণ সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হবে। বাতিল হবে লাইসেন্স। এছাড়া রপ্তানিকারকের এলসিও বন্ধ করে দেওয়া হবে।

সরকারিভাবে এইসব পণ্যের ব্যাগ প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্লাস্টিক ব্যাগের মতোই অনেক কমদামে এই ব্যাগ সরবরাহ করা হবে। এজন্য প্রতিটি জেলায় ডিলারও নিয়োগ করা হয়েছে। অর্ডার দিলেই ডিলারের লোকজন ব্যাগ দিয়ে আসবে।

ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পাটের তৈরি ব্যাগ জেলায় জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাটশিল্প ও পরিবেশ রক্ষা করতে হলে পাটজাত পণ্যের ব্যবহারের বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
 
পলিব্যাগ পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর উল্লেখ করে তিনি জানান, প্রতি বছর বুড়িগঙ্গার তলদেশে ২০ কোটি পলিব্যাগ জমা হয়। এছাড়া এর কারণে ঢাকার নদী, নালা, খাল সবই প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে। তাই একদিনে পরিবেশ রক্ষা অন্যদিকে পাটশিল্প রক্ষায় এখনই সময় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন শুধু বড় ব্যাগের ক্ষেত্রে এ অভিযান চলবে। ধীরে ধীরে এক কেজি, দুই কেজি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাগও তৈরি করে তার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে।

পাটজাত মোড়কের ব্যবহার নিশ্চিতে আয়েজিত সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলন- বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বস্ত্র ও পাট সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার আনিছুর রহমান, পাটকল অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসাইন, খাদ্যমন্ত্রণালয়, কৃষিমন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, চালকল মালিক সমিতি, পরিবহন মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন দফতর ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৫
ইইউডি/আরএইচএস/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।