ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পৌর নির্বাচন

প্রার্থী দেওয়াই বিরোধী দলের চ্যালেঞ্জ

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
প্রার্থী দেওয়াই বিরোধী দলের চ্যালেঞ্জ

ঢাকা: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয়ভাবে প্রার্থী দেবে রাজনৈতিক দলগুলো। এতে সংসদ নির্বাচনের মতো প্রাথমিকভাবে একাধিক প্রার্থী মনোনয়নের সুযোগ নেই।

ফলে বিরোধী দলগুলো প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচন বিধিমালা ১২(৩)(গ)(ইইই) উপ-বিধিতে বলা হয়েছে, ‘রাজনৈতিক দলের মেয়রপ্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বা সমপর‌্যায়ের পদাধিকারী বা তাদের কাছ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির স্বাক্ষরিত এই মর্মে প্রত্যয়নপত্র থাকবে যে, উক্ত প্রার্থীকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তবে শর্ত থাকে যে, কোনো রাজনৈতিক দল কোনো পৌরসভায় মেয়র পদে একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে পারবে না, একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিলে সংশ্লিষ্ট পৌরসভায় উক্ত দলের প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল বলে গণ্য হবে।

আরও শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল তার ক্ষমতারপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম, পদবি, নমুনা স্বাক্ষরসহ একটি পত্র তফসিল ঘোষণার পাঁচদিনের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ও উক্ত পত্রের একটি অনুলিপি নির্বাচন কমিশনেও প্রেরণ করবে। ’

এ সংক্রান্ত বিধির গেজেট ইতোমধ্যে ইসির সহকারী সচিব রাজীব আহসান স্বাক্ষরিত একটি পত্রে ৪০টি নিবন্ধিত দলের কাছে পাঠানো হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, এই বিধি সংসদ নির্বাচনের বিধির সঙ্গে মিল রেখে করা হয়নি। সংসদ নির্বাচনে দলগুলো কোনো আসনের জন্য প্রথমে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন দেয়। এতে যাচাই-বাছাইয়ের পর একাধিক প্রার্থী বৈধ হয়। তাদের মধ্য থেকে একজনকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয় সংশ্লিষ্ট দল। এতে দলটির অন্য বৈধ প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন বলে গণ্য হয়। এক্ষেত্রে দলগুলো ব্যাপক সুবিধা পায়।

প্রাথমিকভাবে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন দিলে কারও না কারও মনোনয়ন বৈধ হবেই। সেক্ষেত্রে প্রার্থীর সংকট হয় না। কিন্তু সংশোধিত পৌরসভা নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী, দলগুলো কোনো আসনে একজন মাত্র প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবে। এক্ষেত্রে সেই প্রার্থীর মনোনয়ন অবৈধ হলে দলটির আর প্রার্থী দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। ফলে অনেক পৌরসভাতেই অনেক দলের প্রার্থী না থাকার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে, একজন প্রার্থী দিলে সেই প্রার্থী যদি মামলা কিংবা অন্য কোনো কারণে নির্বাচনের অযোগ্য হন, সেক্ষেত্রে বিপাকে পড়বে দলগুলো। কেননা, বিকল্প হিসেবে আর কোনো প্রার্থী থাকবে না।
 
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, এমন বিধির কারণে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অন্যতম বড় দল বিএনপি ও শরিকরা। কেননা, ইতোমধ্যেই বিএনপি নেতারা বিভিন্ন সময় অভিযোগ করে আসছেন, মামলার কারণে তাদের তৃণমূল নেত‍ারা পলাতক রয়েছেন।

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৩০ ডিসেম্বর ২৩৬ পৌরসভায় নির্বাচন হবে। এতে ৩ ডিসেম্বর পর‌্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই দলগুলো তোড়জোড় শুরু করেছে। নতুন বিধির কারণে ২৮ নভেম্বর, শনিবারের মধ্যে ইসিতে দলগুলোকে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির তালিকা পাঠাতে হবে। দলগুলোর ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি প্রার্থী চূড়ান্ত করতে সময় পাবেন ৩ ডিসেম্বর পর‌্যন্ত।
 
ইসির উপ-সচিব পর‌্যায়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিকভাবে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার সুযোগ না থাকায় দলগুলোকে খুব সর্তকতার সঙ্গে প্রার্থী সিলেক্ট করতে হবে। কেননা, দলের মনোনয়প্রাপ্ত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হলেই সংশ্লিষ্ট পৌরসভায় মেয়র পদে দলটির আর প্রার্থী থাকবে না।

এদিকে একটি কমন চ্যালেঞ্জও রয়েছে দলগুলোর। কারন প্রথম থেকেই একটি পৌরসভায় মেয়র পদে কেবল একজন মাত্র প্রার্থী থাকায়, অন্য যোগ্য প্রার্থীগুলোও সংশ্লিষ্ট পৌরসভায় স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। ফলে দলের ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সংসদ নির্বাচনে এ সুযোগ নেই।

পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সুযোগও বাড়ানো হয়েছে। স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনের জন্য আগের ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনের বদলে ১০০ ভোটারের সমর্থন দাখিলের বিধান রাখা হয়েছে। ফলে যে ব্যক্তি দলের মনোনয়ন পাবেন না, তিনি সহজেই স্বতন্ত্র হিসেবে প্রার্থী হতে পারবেন।

** বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের আগে আগাম প্রচারণা বন্ধের নির্দেশ

বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
ইইউডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।