সিলেট: দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে সিলেটের তিন পৌরসভায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঝে চলছে ভিন্ন আমেজ। প্রয়োজন শুধু কেন্দ্রের সবুজ সংকেত।
তবে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশ্বাসে বসে নেই তারা। ২৪ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই নিজেদের অবস্থান জানান দিতে প্রচারণায় ব্যস্ত সম্ভাব্য প্রর্থীরা। ভোটারের দোয়ারে গিয়েও কড়া নাড়াচ্ছেন তার।
সম্ভাব্য এসব প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন পেতে একটু বেশি প্রত্যাশী তিন পৌরসভার বর্তমান মেয়র পদে থাকা আওয়ামী লীগ নেতারা। যদিও আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালিকা বেশ দীর্ঘ। একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী বিএনপিরও।
এ তিন পৌরসভায় জাতীয় পার্টিও একক মনোনয়ন দেবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে তৎপর জামায়াত নেতারাও।
গোলাপগঞ্জ: আওয়ামী লীগ-বিএনপির অর্ধডজন নেতা এখানে সম্ভাব্য তালিকায়। তারা সকলেই দলের মনোনয়ন পেতে আশাবাদী। এখানে মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান মেয়র, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ পাপলু।
সম্ভাব্য তালিকায় আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল জব্বার চৌধুরী, যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম রাবেল ও স্বতন্ত্র আমিনুল ইসলাম লিপন, পৌর বিএনপি’র সভাপতি মশিকুর রহমান মহি ও সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহীন।
বর্তমান মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে দলের প্রতীক পাওয়ার আমেজই আলাদা। অনেকটা স্বপ্নের মতো। আর একজন প্রার্থী দিলে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হবে না।
পৌর এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক অজামিল চন্দ্র নাথ বাংলানিউজকে বলেন, পৌর নির্বাচনে বিভিন্ন দলের একাধিক প্রার্থী থাকলেও বড় দুই দলের মনোনীত প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। বিগত নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতা তাই বলে।
কানাইঘাট: জেলার সীমান্তবর্তী এ পৌর সভায় মেয়র পদে ৬ প্রার্থীর নাম আলোচনায়। তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও বর্তমান পৌর মেয়র লুৎফুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য প্রকৌশলী মাহমুদ হোসেন, পৌর কাউন্সিলর ও বিএনপি’র সভাপতি শরিফুল হক, উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক রহিম উদ্দিন ভরসা, যুবদল সভাপতি নূরুল ইসলাম।
এছাড়া উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক বাবুল আহমদ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জামায়াত নেতা ওলিউল্লাহ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
পৌরসভার বর্তমান মেয়র লুৎফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন- অতীতে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে সকলেই দলীয় পরিচয় ব্যবহার করতেন। এতে ভোটারদেরও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতো। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে এই সমস্যার নিরসন হবে। আর দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ প্রার্থী হলে বহিস্কারের খড়গ নামতে পারে।
সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী পৌর বিএনপি’র সভাপতি শরিফুল হক বলেন, দলীয় নির্বাচনে ব্যক্তি পরিচয়ের প্রাধান্য থাকেনা। দলীয় প্রার্থীই ভোট পাবেন। তাই দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছি।
আর দলীয় প্রতীকে নির্বাচন ইতিবাচক দিক বলেও মত দিয়েছেন উপজেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক বাবুল আহমদ।
এ পৌর এলাকার বাসিন্দা গণমাধ্যম কর্মী এখলাছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রার্থী যাকেই দেওয়া হোক না কেনো এখানে জনপ্রিয়তা বেশি আওয়ামী লীগের। তবে বিগত পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত প্রার্থী ওলিউল্লাহ এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে প্রচারণা চালালেও এবার মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবে বিএনপির প্রার্থী।
জকিগঞ্জ: জেলার সীমান্তবর্তী এ পৌরসভায় সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে ৬ জন প্রচারণা চালাচ্ছেন। তারা হলেন- বর্তমান মেয়র ও পৌর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আবদুল মালেক ফারুক, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সালাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাসিম আহমদ, সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান, পৌর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি অধ্যাপক বদরুল হক বাদল।
এ ব্যাপারে বর্তমান মেয়র আবদুল মালেক ফারুক বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন মানে নিজ দলের কেউ প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন না।
সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক বদরুল হক বাদল বলেন, ‘দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার হয়ে শ্রম দেবো। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে নারাজ তিনিও।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
এনইউ/বিএস