ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পৌর নির্বাচন

১৯ কারণে অযোগ্য হবেন প্রার্থী

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
১৯ কারণে অযোগ্য হবেন প্রার্থী

ঢাকা: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের যোগ্যতা-অযোগ্যতা নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে প্রার্থীর প্রাথমিক যোগ্যতা হিসেবে চার শর্ত এবং অযোগ্য হওয়ার ১৯টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।


 
ইসির সহকারী সচিব রাজীব আহসান স্বাক্ষরিত ওই যোগ্যতা-অযোগ্যতার ব্যাখ্যা ইতোমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
 
পৌরসভা আইন-২০০৯’র ১৯ ধারার উদ্ধৃতি দিয়ে ওই ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে- ‘মেয়র বা কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হতে আগ্রহীকে বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে। যার বয়স হবে অন্তত ২৫ বছর। মেয়র পদের জন্য সংশ্লিষ্ট পৌরসভার যেকোনো ওয়ার্ডের ভোটার হতে হবে। আর কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হতে হলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার হতে হবে’।
 
এদিকে প্রার্থীর অযোগ্যতা হিসেবে সুনির্দিষ্টভাবে ১৯টি কারণের কথা বলা হয়েছে। যদি কেউ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন বা হারান, কোনো উপযুক্ত আদালতের বিচারে অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হন ও দেউলিয়া ঘোষিত হন এবং দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায় থেকে অব্যহতি লাভ না করে থাকেন, তবে তিনি মেয়র বা কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হবেন।
 
এছাড়া যদি কোনো ব্যক্তি কোনো ফৌজদারি বা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং মুক্তি পাওয়ার পর যদি পাঁচ বছর সময় অতিবাহিত না হয় তাহলে তিনি নির্বাচনের অযোগ্য হবেন।
 
কেউ যদি প্রজাতন্ত্রের বা পৌরসভার অথবা অন্য কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোনো লাভজনক পদে সার্বক্ষণিক অধিষ্ঠিত থাকেন তিনিও পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র বা কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হতে পারবেন না।
 
আবার বিদেশি কোনো রাষ্ট্র থেকে অনুদান বা তহবিল গ্রহণ করে এ ধরনের বেসরকারি সংস্থার প্রধান কার্যনির্বাহী পদে থেকে পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণ করেন বা পদচ্যূতির পর এক বছর অতিবাহিত না হয় তাহলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন।
 
সরকারি বা আধা সরকারি দফতর, কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সমবায় সমিতি বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগের চাকরি থেকে নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি, অসদাচরণ ইত্যাদি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে চাকরিচ্যুত, অপসারিত হলে বা বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার পাঁচ বছর অতিবাহিত না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন।
 
কোনো সমবায় সমিতি এবং সরকারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ছাড়া সংশ্নিষ্ট পৌর এলাকায় সরকারকে পণ্য সরবরাহ করার জন্য বা সরকার গৃহীত কোনো চুক্তির বাস্তবায়ন বা সেবা কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য কোনো ব্যক্তি তার নিজের নামে বা তার ট্রাস্টি হিসেবে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নামে বা তার সুবিধার্থে বা তার উপলক্ষে কোনো হিন্দু যৌথ পরিবারের সদস্য হিসেবে তার কোনো অংশ বা স্বার্থ আছে এমন চুক্তি করেন তবে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।
 
এছাড়া কারো পরিবারের কোনো সংদস্য যদি সংশ্লিষ্ট পৌরসভার কার্য সম্পাদনে বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত হন বা তার জন্য নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা পৌরসভার কোনো বিষয়ে তার কোনো ধরনের আর্থিক স্বার্থ থাকে, তবে এ ধরনের ব্যক্তিও নির্বাচনের অযোগ্য হবেন।
 
অন্যদিকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিনও কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের থেকে গৃহীত ঋণ মেয়াদত্তীর্ণ অবস্থায় অনাদায়ী রাখলে নির্বাচন করা যাবে না। এক্ষেত্রে গৃহনির্মাণ ও ক্ষুদ্র কৃষিঋণ অন্তর্ভুক্ত হবে না।
 
আবার এমন কোনো কোম্পানির পরিচালক বা ফার্মের অংশীদাররা যারা কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত কোনো ঋণ বা তার কোনো কিস্তি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখে খেলাপি রাখেন তবে এ ধরনের ব্যক্তিও নির্বাচনের অযোগ্য হিসেবে গণ্য হবেন।
 
এছাড়া পৌরসভা থেকে গৃহীত কোনো ঋণ অনাদায়ী হলে, দায়কৃত অর্থ পৌরসভায় পরিশোধ না করলে, পৌরসভার তহবিল তসরুফের কারণে দণ্ডপ্রাপ্ত হলে বা অন্য কোনো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা জাতীয় সংসদের সদস্য হলেও পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা থাকবে না।
 
দণ্ডবিধির ১৮৯, ১৯২, ২১৩, ৩৩২, ৩৩৩ ও ৩৫৩ ধারার অধীনে নির্বাচনের পাঁচ বছর আগে যেকোনো সময়ে কোনো ব্যক্তি সাজাপ্রাপ্ত হলে বা আদালত ঘোষিত ফেরারি আসামি হলে এবং কোনো আদালত বা ট্রাইব্যুনালের বিচারে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত হলে তিনিও নির্বাচনের যোগ্যতা হারাবেন।
 
আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৬ পৌরসভায় একযোগে ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। এতে ২৩৬টি মেয়র পদ, ৭৪২টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদ এবং ২৯৭০টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র গ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। প্রায় ৬২ হাজার কর্মকর্তা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করবেন। প্রায় ৭২ লাখ ভোটার তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছেন।
 
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ০৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময়। ওই সময়ের মধ্যেই প্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিষয়গুলো মাথায় রেখেই মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
ইইউডি/জেডএস/এএসআর

** প্রার্থী দেওয়াই বিরোধী দলের চ্যালেঞ্জ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।