ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘২০২৪ সালের আগে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বের হওয়া সম্ভব না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
‘২০২৪ সালের আগে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বের হওয়া সম্ভব না’ ছবি : শাকিল/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা : ২০২৪ সালের আগে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়। এই সময়ের মধ্যে বের হতে হলে যে তিনটি ক্যাটাগরি পূরণ করতে হবে, তা পূরণ করার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।



বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ অডিটোরিয়ামে আনকাটের ‘দ্য লিস্ট ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রিস রিপোর্ট-২০১৫’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য এমন মন্তব্য করেন।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হতে তিনটি ক্যাটাগরি পূরণ করতে হবে। এগুলো হচ্ছে- মাথাপিছু আয়, মানব সূচক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি। এই তিনটির মধ্যে বাংলাদেশ শুধু অর্থনৈতিক ঝুঁকির ক্যাটাগরি পার করেছে। বাকি মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে স্বল্পোন্নত ৪৮ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ নিচের দিক থেকে দ্বিতীয়। আর মানব সূচক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটু কাছাকাছি তথা ৬৬ শতাংশের জায়গায় ৬৩.৮ শতাংশ অর্জন করেছে।

তিনি আরো যোগ করে বলেন, এই তিন ক্যাটাগরির মধ্যে দুইটি ক্যাটাগরি পূরণ করতে পারলে সেই দেশকে তিন বছর পর্যালোনার মধ্যে রাখা হবে। দেশ সেই অবস্থানে থাকলে এবং বাকি একটি ক্যাটাগরি পূরণ করতে পারলে তাকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের করে দেওয়া হবে।

তিনি এই তালিকা থেকে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, প্রথমে সরকারকে উত্তরণ পূর্ব ও উত্তরণ উত্তর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। কেন না গৎবাধা পরিকল্পনা নিয়ে এই তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় প্রবেশ করা যাবে না। এজন্য প্রথমে মানব সম্পদ উন্নয়নে গু্রুত্ব দিতে হবে। এই মানব সম্পদ উন্নয়নে জোর দিলে আরো দুটি গু্রুত্বপূর্ণ জায়গায় জোর দিতে হবে। তাহলো কৃষি ব্যবস্থা এবং গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন।

তিনি আরো যোগ করে বলেন, কেউ কেউ বলছেন ২০২১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে দেশ। এটা অসম্ভব। এ জন্য মাথাপিছু আয় বর্তমান থেকে চারগুণ করতে হবে। বর্তমানে মাথাপিছু আয় ১১০০ ডলার, উচ্চ মধ্যম আয়ের জন্য এটাকে ৪১২৫ ডলারে নিয়ে যেতে হবে।

এটা বাস্তব সম্মত নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন,  ৫/৬ বছরে মাথাপিছু আয় চারগুণ বাড়াতে বড় ধরণের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার দরকার হতে পারে।

২০২১ সালের মধ্যে যারা উচ্চ মধ্যম আয়ের কথা বলছেন তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এটা রাজনৈতিক শ্লোগান হতে পারে তবে এটা বাস্তবে অসম্ভব।

দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশ কৃষি ভূমি উৎপাদনে এক নাম্বারে, কিন্তু শ্রমের উৎপাদনশীলতায় সবার থেকে পিছিয়ে। শ্রমের উৎপাদনশীলতার দিক থেকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে আমরা ৪৮তম। তাই কোন দেশ কৃষি উৎপাদনে উন্নয়ন ছাড়া উন্নত দেশে পরিণত হতে পারে না। সেই দিক থেকে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে।

মধ্যম আয়ের দেশই সব কিছু নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এইসব ক্যাটাগরি করা হয় শুধু আয়ের দিক থেকে। কিন্তু স্বল্পোন্নত দেশ ও উন্নয়নশীল দেশের তালিকা হয় ওই তিনটি ক্যাটাগরির উত্তরণের মাধ্যমে। মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে অনেক উন্নত দেশ আছে যারা এখনো স্বল্পোন্নত দেশের তালিকার মধ্যে। তাই আমাদের মাথাপিছু আয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে সামষ্টিগত উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা পত্র উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান, পরিচালক আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ, পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এবং অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘন্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
এডিএ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।