ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের চারটি সিনেমা হলে বোমা হামলার ১৩ বছর পেরিয়েছে। প্রায় ৮ বছর আগে আদালতে দাখিল করা হয়েছে অভিযোগপত্র।
এ নিয়ে মনোকষ্টে রয়েছেন নিহতদের স্বজনেরা। তবুও মানুষরূপী হায়েনাদের সঠিক বিচারের প্রতীক্ষায় দিন গুনছেন তারা।
ময়মনসিংহের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম মুসা বাংলানিউজকে জানান, সাক্ষীদের ঠিকমতো পাওয়া যায় না। এ কারণে বিচার কাজ শেষ করা যাচ্ছে না।
বর্তমানে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এসব মামলা বিচারাধীন রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, হামলাকারীরা নিজেরাই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এ মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সরকারও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
ঘটনার ৫ বছর পর অভিযোগপত্র
সিনেমা হলগুলোতে বোমা হামলা মামলাগুলোর প্রথমে তদন্ত শুরু করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। পরে তদন্তভার চলে যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি)। পর্যায়ক্রমে ৫ জন সিআইডি কর্মকর্তা চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্ত করেন। সর্বশেষ তদন্ত করেন (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার মো: রফিকুল ইসলাম।
সিআইডি সূত্র জানায়, প্রথম দায়ের হওয়া চারটি মামলা পরে ৮টি মামলায় রূপ নেয়। এর মধ্যে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে চারটি ও হত্যার অভিযোগে আরো চারটি মামলা দায়ের করা হয়।
ঘটনার ৫ বছর পর ২০০৭ সালের ৮ অক্টোবর নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) শূরা সদস্য সালাহউদ্দিন, জামালপুরের জাহিদুল ইসলাম সুমন ওরফে মিজান এবং ঠাকুরগাঁওয়ের আনোয়ার হোসেন ওরফে শহীদকে অভিযুক্ত করে ১নং আমলি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
পরে ২০০৭ সালের ২৬ নভেম্বর ময়মনসিংহের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো: নজরুল ইসলাম হাওলাদারের আদালতে অভিযোগপত্র গ্রহণ করে অপরাধীদের বিচারকাজ শুরু করতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়।
সালেহীনের স্বীকারোক্তিতে সেদিনের ঘটনা
২০০৬ সালের ৬ জুন জামালপুরের প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জেএমবি নেতা ও শূরা সদস্য সালেহীন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে চার সিনেমা হলে বোমা হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
সালেহীন ওই সময় আদালতকে জানান, ২০০২ সালে জামালপুরে শায়খ আব্দুর রহমানের বাসায় এবং পরে ময়মনসিংহের কলেজ রোডের পাশের একটি বাসায় বসে চার সিনেমা হলে হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়।
পরিকল্পনা মোতাবেক ২০০২ সালের ০৭ ডিসেম্বর ঈদের পরদিন জেএমবি সদস্য শহীদ, মিজান, মাসুদ ও কামাল ময়মনসিংহের অলকা, ছায়াবাণী, পূরবী ও অজন্তা সিনেমা হলে প্রায় একই সময়ে বোমা হামলার ঘটনা ঘটান। এতে ১৮ জন নিহত ও দুই শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
বর্তমান ধর্মমন্ত্রীসহ ৪০ জনকে অব্যাহতি
জঙ্গি নেতা সালাহউদ্দিন ওরফে সালেহীন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর সিআইডির দাখিল করা অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বর্তমান ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান, আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক সাবের হোসেন চৌধুরী, সাংবাদিক এনামুল হকসহ ৪০ রাজনৈতিক নেতাকর্মী, সিনেমা হলের কর্মচারী ও নিরীহ ব্যক্তিদের।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৫
এএসআর