ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইউনাইটেডে রোগীকে যৌন নিপীড়ন

‘স্টাফ নার্সকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৫
‘স্টাফ নার্সকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ’

ঢাকা: হাইকোর্টের আদেশের পরও এক নারী রোগীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের স্টাফ নার্স সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

সোমবার (০৭ ডিসেম্বর) সকালে গুলশানের জোনের এসি ও ওসি এ বিষয়ে আদালতকে অবহিত করার পর বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো.সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী বছরের ০৬ জানুয়ারি নির্ধারণ করেন।


 
সোমবার আদালতে উপস্থিত ছিলেন গুলশান জোনের এসি ও ওসি। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস। পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি মামলা করেছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তারা আসামিকে খুঁজে পায়নি। এরপর আদালত মামলার তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন ০৬ জানুয়ারি দাখিল করতে বলেছেন। এবং এর মধ্যে আসামি সাইফুলকে গ্রেফতার করতে বলেছেন।

‘ইউনাইটেড হাসপাতালে নারী রোগীকে যৌন নিপীড়ন’ শীর্ষক প্রতিবেদন একটি জাতীয় দৈনিকে ০৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়। ওইদিন এ প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জড়িত স্টাফ (ব্রাদার) নার্সের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
 
একইসঙ্গে জড়িত স্টাফ নার্স সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে ০৭ ডিসেম্বর আদালতে হাজির করতে গুলশান থানাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রাজধানীর অভিজাত আবাসিক এলাকা গুলশানের ইউনাইটে হাসপাতালের আইসিইউতে এক নারী রোগীকে যৌন নিপীড়নের চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। যৌন নিপীড়নের অভিযোগে হাসপাতালের সাইফুল ইসলাম নামে ব্রাদারকে (স্টাফ নার্স) চাকরিচ্যুত করা হয়েছে’।

‘তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাইফুলের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সোমবার ঘটনাটি ঘটলে বুধবার বিষয়টি জানাজানি হয়। মঙ্গলবার সাইফুলকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাকরিচ্যুত করে’।

‘জানা গেছে, ওই নারী রোগী ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় অপারেশন হওয়ায় তিনি অজ্ঞান ছিলেন। এ সুযোগে হাসপাতালের ব্রাদার সাইফুল ইসলাম তাকে যৌন নিপীড়ন করেন। ওই রোগী সাংবাদিকদের বলেন, তিনি অজ্ঞান ছিলেন। হঠাৎ জ্ঞান ফিরে দেখেন, তার বুকসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় একটি হাত বুলাচ্ছে। একই সঙ্গে তার শরীরের কাপড় (চাদর) সরাচ্ছে। তিনি তাকিয়ে দেখেন ওই হাত একটা ছেলের। তিনি ওই ছেলের মাধ্যমে নার্সদের ডাকার চেষ্টা করেন। প্রায় আধা ঘণ্টা পর নার্স আসেন। নার্স এসে তাকে (নারী) ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তার স্বামীকে না জানাতে অনুরোধ করেন’।
 
‘একপর্যায়ে ওই নারী স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তাকে দেখা করতে দেয়া হয়নি। যৌন নিপীড়নের শিকার ওই নারীর স্বামী বলেন, প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর তিনি স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন। অভিযুক্ত ওই ব্রাদার সাইফুলকে পুলিশে সোপর্দ করার জন্য বলেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে সাইফুলকে পুলিশে দিতে রাজি হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারবার তাকে (নারীর স্বামী) মামলা করার জন্য বলেছেন। কিন্তু তিনি মামলা না করেই সাইফুলকে পুলিশে দেয়ার কথা বলেছেন। বুধবার ওই রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন’।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৫
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।