রাজশাহী: মহান বিজয় দিবস উদযাপনের লক্ষে এবছর ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। এজন্য কঠোর নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে এবার মহান বিজয় দিবস উদযাপনের লক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে আগামী ১৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার(১১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় রাজশাহী মহানগরীর ভদ্রা স্মৃতি অম্লান চত্বর থেকে বিজয় শোভাযাত্রা বের করা হবে। শোভাযাত্রাটি গৌরহাঙ্গায় শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর হয়ে কাশিয়াডাঙ্গাসহ বিভিন্ন প্রধান সড়ক ঘুরে শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হবে।
সকাল সাড়ে ৯টায় শিশু একাডেমিতে রয়েছে শিশুদের চিত্রাঙ্কন, দেশাত্মবোধক গান ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা।
বেলা ১১টায় রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। পরে সেখানে বিজয় দিবস উপলক্ষে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। বিকেল ৩টায় গোদাগাড়ীর কাকনহাটে ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠি মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
পরদিন ১৬ ডিসেম্বর বুধবার রাত ১২টা ১ মিনিটে রাজশাহী জেলা পুলিশ লাইনে ৩১বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবটির শুভ সূচনা করা হবে। রাত ১২টা ১ মিনিটে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এলাকার স্মৃতিসৌধ ও শহীদ মিনারে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।
ওই দিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৯টায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন।
পরে তিনি পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস, বিএনসিসি, স্কাউটস, গালর্স গাইড, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রী, প্রতিবন্ধী ও পথশিশু এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যদের সম্মিলিত কুচকাওয়াজ অভিবাদন গ্রহণ করবেন। সকাল ১১টায় মুক্তিযুদ্ধের ওপর আলোকচ্চিত্র প্রদর্শনী হবে মহানগরীর কামারুজ্জামান চত্বরে।
রাজশাহী ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ইসলামী গান, কবিতা আবৃত্তি ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন সন্ধ্যা ৬টায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের গ্রিন প্লাজায় খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
এদিন সকাল-সন্ধ্যা প্রবেশমূল্য ছাড়া রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, পার্ক, চিড়িয়াখানা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কেন্দ্রীয় কারাগার, সরকারি শিশুসদন, শিশু নিবাস, অন্ধ, মূক ও বধির বিদ্যালয়, সেফ হোম, এস ও এস শিশুপল্লী, শিশু বিকাশ কেন্দ্র এবং বেসরকারি এতিমখানায় বিজয় দিবস উপলক্ষে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
অপরদিকে, জাতির অব্যাহত সুখ, শান্তি, অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করে সব মসজিদে বাদ জোহর দোয়া এবং মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে সুবিধা মতো সময়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। সিনেমা হলে এবং গণযোগাযোগ অধিদপ্তর লক্ষ্মীপুর মোড়সহ জনবহুল স্থানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করবে।
বিকেলে রিভার ভিউ কালেক্টরেট স্কুলে আলোচনা সভা ও নারীদের ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। বিকেলেই রাজশাহী জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে মেয়র একাদশ বনাম বিভাগীয় কমিশনার একাদশের মধ্যে।
এছাড়া ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর উভয় দিন সন্ধ্যায় রাজশাহীর সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, বেসরকারি ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোকসজ্জা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৫
এসএস/পিসি