ঢাকা: শনিবার (৯ জানুয়ারি) বরেণ্য সাংবাদিক-সাহিত্যিক সন্তোষ গুপ্তের ৯১তম জন্মবার্ষিকী। সন্তোষ গুপ্তের জন্ম ১৯২৫ খৃষ্টাব্দের ৯ জানুয়ারি ঝালকাঠি জেলার রুনসী গ্রামে।
তাঁর অসাধারণ তীক্ষ্ম‘অনিরুদ্ধের কলাম’ বিদগ্ধ মহলে সমাদৃত ছিল। দীর্ঘ দুই যুগে (১৯৭৮-২০০২) সহস্রাধিক কলাম লিখেছিলেন অনিরুদ্ধ; এর বাইরেও তাঁর লেখা সম্পাদকীয় ও অন্যান্য প্রবন্ধ-নিবন্ধের সংখ্যা অসংখ্য। সাধারণভাবে সংবাদপত্রের লেখা সাম্প্রতিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য; তাই সাহিত্যের চিরস্থায়ী আসন তার দাবি নয়। কিন্তু অনিরুদ্ধের কলামের মতন বেশ কিছু রচনা সমকালীন হয়েও সর্বকালীন; সাম্প্রতিক হয়েও তা কালোত্তীর্ণ।
সাংবাদিকতা পেশায় আসার আগে বামধারার রাজনীতির সংগে যুক্ত ছিলেন তিনি। সন্তোষ গুপ্ত শিক্ষা জীবন শেষে কলকাতায় আইজি অব প্রিজনস্ অফিসে চাকরি নিয়েছিলেন। দেশভাগের সময় অপশন দিয়ে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। কিন্তু বামধারা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কারণে তাঁকে সে চাকরি হারাতে হয়। রাজনৈতিক কারনে তাঁকে একাধিকবার জেলেও যেতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য বিভাগে কর্মরত ছিলেন।
শিল্প-সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গনে সন্তোষ গুপ্তের অবাধ বিচরণ ছিল। কবিতা, শিল্পকলা, চিত্রকলা, রাজনীতি, সাহিত্য, সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর ১৮টি গ্রন্থ রয়েছে। সম্পাদনা করেছেন বহু গ্রন্থ। তাঁর অসংখ্য লেখা এখনও অগ্রন্থিত রয়েছে। সাংবাদিকতা ও সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পদক (মরণোত্তর) সহ একুশে পদক, শেরে বাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদক, মাওলানা তর্কবাগীশ পদক, জহুর হোসেনের স্মৃতি পদকসহ বহু পুরস্কার, পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
সন্তোষ গুপ্ত যেমন দুর্দান্ত পাঠক ছিলেন তেমনি ছিলেন সার্বক্ষণিক লেখক। তাঁর জীবন ও কর্ম অনুসরণযোগ্য।
২০০৪ সালের ৬ আগস্ট মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত কারণে প্রায় ৮০ বছর বয়সে এই অসাধারণ গুণী সাংবাদিকের জীবনাবসান ঘটে।
সন্তোষ গুপ্তের ৯১তম জন্মবাষির্কী উপলক্ষে সন্তোষ গুপ্ত স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে শনিবার সকাল ১০টায় পোস্তগোলায় নির্মিত সন্তোষ গুপ্ত স্মৃতিস্মম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। সন্তোষ গুপ্তের পরিবারের পক্ষ থেকেও তাঁর স্মৃতিস্মম্ভে শ্রদ্ধা জানানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৫
আরআই