সিরাজগঞ্জ/টাঙ্গাইল: বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ জনে। এদের মধ্যে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর ছেলে শরীফ রানাও (৩৫) রয়েছেন।
শনিবার (০৯ জানুয়ারি) সকালে ৮টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়ে সেতুর ৪০ নম্বর পিলার এলাকায় পরপর এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে শরীফ রানা ছাড়া আরো তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন, সিরাজগঞ্জের কোনাবাড়ি গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন (৩৫), পাবনার সুজানগর গ্রামের নুর আলীম (৪২) ও সোহেল (৩৫)।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখেরুজ্জামান ও পশ্চিম থানার ওসি রকিবুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, সকালে ঘন কুয়াশার কারণে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী একটি গরুর ট্রাককে একই দিক থেকে আসা সরকার ট্রাভেলসের একটি বাস পেছন দিক থেকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় পেছেনে থাকা অন্যান্য প্রায় ৫টি যানবাহন একে অন্যের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই ৪ জন মারা যান।
এছাড়া সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সেতুর উপর আরো একটি দুর্ঘটনায় অপর একজন নিহত হয়। এসব ঘটনায় অন্তত ৩০জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে হাসপাতালে নেওয়ার পথে একজন ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আরও ২ জন।
এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সিরাজগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি উদ্ধার অভিযানে যাওয়ার পথে বিপরীত দিক থেকে আসা বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানা পুলিশের গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চার পুলিশ ও চার ফায়ার সার্ভিস কর্মী আহত হন। আহতদের সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অপরদিকে, দুর্ঘটনার পর থেকে প্রায় ৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর বেলা ১২টার দিকে সেতুর উপর এক লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।
আহতদের মধ্যে কনস্টেবল সেলিম রেজা, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার গাড়ি চালক কনস্টেবল মকবুল হোসেন, ফায়ার সার্ভিসে সাব অফিসার মনির হোসেন, ফায়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, মামুন হোসেন ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়িচালক ফরহাদ হোসেন এবং বগুড়া জেলার ঠনঠনিয়া গ্রামে মকবুল হোসেনের ছেলে আরিফুল হোসেন, একই গ্রামের কাসেম আলীর ছেলে আসরাফ আলীর নাম জানা গেছে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আকরামুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যসহ দুর্ঘটনায় আহত ১৬জন এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। দুর্ঘটনায় নিহত দু’জনের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ওসি আখেরুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ৪ জন ও থানায় দু’জনের মরদেহ রাখা হয়েছে। এছাড়া আহত প্রায় ১৫ জনকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় ভূমি মন্ত্রীর ছেলে নিহতের বিষয়টি জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ।
ঈশ্বরদী করেসপন্ডেন্ট জানান, মন্ত্রীর ছেলে শরীফ রানা মাইক্রোবাসে করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা যাচ্ছিলেন।
পথে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়ে গরুবোঝাই ট্রাকের ধাক্কা শরীফ রানাকে বহনকারী মাইক্রোবাসেও লাগে। এতে গাড়িতে থাকা রানা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে দ্রুত স্থানীয় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে ঈশ্বরদী পৌরসভা নবনির্বাচিত মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, মন্ত্রীর এপিএস বশির আহমেদ বকুলসহ পরিবারের সদস্যরা তার মরদেহ টাঙ্গাইল থেকে ঈশ্বরদীতে নিয়ে আসেন।
** ভূমিমন্ত্রীর ছেলের মৃত্যুতে বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা পরিষদের শোক
** সড়ক দুর্ঘটনায় ভূমি মন্ত্রীর ছেলেসহ নিহত ৭
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৬/আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা
এসএইচ/এসআর