ঢাকা: আদালতের কর্মঘণ্টা বাড়ানোসহ বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপের পর দায়িত্ব নেয়ার সাড়ে দশ মাসেই আপিল বিভাগে প্রায় সাড়ে নয় হাজার মামলা নিষ্পত্তি করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
এ সময়ে বিগত বছরে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ৫,৭৮৯টি।
এছাড়া হাইকোর্টে নিষ্পত্তি হয়েছে ৩৩ হাজার ৩৮০টি মামলা। অথচ ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ২২ হাজার ৪৭৭টি।
এমন তথ্য উঠে এসেছে প্রধান বিচারপতির দেয়া এক বক্তব্যে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি তার ভাষণে বলেন, প্রধান বিচারপতির দায়িত্বভার গ্রহণের পর আমি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ মোট ১৩ (তের) জেলার সকল পর্যায়ের আদালত পরিদর্শন করেছি। আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং সুপ্রীম কোর্টের নিরবচ্ছিন্ন মনিটরিং এবং প্র্যাকটিস ডিরেকশন ইস্যুর ফলে বিচারকদের মধ্যে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির স্পৃহা বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় যা পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দৃশ্যমান হবে।
পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট হয় যে, বর্তমান বছরে দেশের নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতে মামলা নিষ্পত্তির হার বিগত বছরের এ সময়ের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধান বিচারপতির তথ্য মতে, ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখ হতে ৩০ নভেম্বর ২০১৫ তারিখ পর্যন্ত আপীল বিভাগে মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা ৯,৩৫৬টি। এ সময়ে বিগত বছরে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ৫,৭৮৯টি। এক্ষেত্রে মামলা তুলনামূলক নিষ্পত্তির শতকরা হার ১৬২ ভাগ।
হাইকোর্ট বিভাগে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা ৩৩,৩৮০টি।
অথচ ২০১৪ সালে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ২২,৪৭৭টি। এক্ষত্রে মামলা তুলনামূলক নিষ্পত্তির শতকরা হার ১৪৯ ভাগ।
২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন আদালতে মোট মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৭৩৩টি। এ সময়ে ২০১৪ সালে নিষ্পত্তির পরিমাণ ৯ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫২টি। এক্ষেত্রে মামলা তুলনামূলক নিষ্পত্তির শতকরা হার ১০৭ ভাগ।
হাইকোর্ট সূত্র মতে, বিচারকাজ দ্রুত তরান্বিত করতে প্রধান বিচারপতি ২০১৫ সালে ১৩টি আদেশ দিয়েছেন। এ কারণে মামলা নিষ্পত্তির হার বিগত বছরগুলোর তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।
এসব আদেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- প্রতিটি জেলার মামলা ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন, দ্বিতীয়ার্ধে দুপুর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পূর্ণ সময় বিচারকদের কাজ করা, জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের পূর্বানুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না ইত্যাদি।
এছাড়া ‘মামলার জট কমানো এবং বিচার প্রার্থীদের দ্রুত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে’ গত বছরের ১৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগ ও হাইকোর্টে আদালতের সময়সূচি এবং অফিসের সময়সূচি বাড়িয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
আপিল বিভাগের কার্যক্রম সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলবে। বিরতির পর আবার বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে সোয়া একটা পর্যন্ত। যা আগে ছিলো সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা, বিরতির পর বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত।
অফিসের সময়সূচি রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। আগে যা ছিলো সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত।
হাইকোর্ট বিভাগের কার্যক্রম সকাল সাড়ে দশটা থেকে বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত। বিরতির পর দুপুর ২টা থেকে বিকাল সোয়া চারটা পর্যন্ত।
যা আগে ছিলো সকাল সাড়ে দশটা থেকে বেলা ১টা, বিরতির পর দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
অফিসের সময়সূচি সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে। আগে যা ছিলো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৫
ইএস/জেডএম