ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘নিয়ন্ত্রক সংস্থার গাফিলতিতে তৈরি হচ্ছে ক্ষতিকারক কয়েল’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৬
‘নিয়ন্ত্রক সংস্থার গাফিলতিতে তৈরি হচ্ছে ক্ষতিকারক কয়েল’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দেশে অনুমোদনহীন  কারখানায় ক্ষতিকারক মশার কয়েল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর গাফলতি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘অনুমোদনহীন মশার কয়েল জনস্বাস্থ্যের বিপর্যয় ডেকে আনছে’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।



ইনু বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর নাকের ডগায় উচ্চ মাত্রার ক্ষতিকর রাসায়নিক সমৃদ্ধ মশার কয়েল বাজারজাত করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এটি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ব্যর্থতা, গাফিলতি ও আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই), বাংলাদেশ পাবলিক হেলথ প্রোডাক্ট (পিএইচপি) এবং কৃষি অধিদফতরকে এ বিষয়ে অবিলম্বে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষতিকারক মশার কয়েল উৎপাদনকারী বে-আইনি কোম্পানি খোঁজে বের করে তাদের সিলগালা করে দেওয়া উচিৎ।
 
হাসানুল হক ইনু বলেন, ভারত-চীন থেকে আমদানি ছাড়াও ক্ষতিকারক বেশিরভাগ কয়েল দেশেই উৎপাদন হচ্ছে। এসব মশার কয়েল মশা, কীট-পতঙ্গকে যেমন ধ্বংস করছে, তেমনি জনস্বাস্থ্যকেও ঝুঁকিতে ফেলছে।

‘অতি মুনাফার লোভ সমাজকে নষ্ট করছে’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সমাজকে রক্ষা করতে হলে ব্যবসার ক্ষতিকর দিকগুলো রোধ করতে হবে। ফসল বাঁচাতে যেমন বারবার নিড়ানী দিতে হয়, আগাছা উপড়ে ফেলতে হয়; তেমনি স্বাস্থ্য রক্ষার জন্যও ভেজাল রোধ করতে হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে মশামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার বিষয়ে একটি আলাদা বিভাগ থাকা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। ইনু বলেন, মাদক বা ভেজালবিরোধী অভিযানের মতো বেআইনি মশার কয়েল কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো দরকার।

স্বাস্থ্য বিষয়ক অনলাইন আমারহেলথ.কম আয়োজিত এ সেমিনারে বলা হয়, ডব্লিওএইচও মশার কয়েলে সর্বোচ্চ দশমিক ৩ ‘একটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট’ রাসায়নিক ব্যবহার নির্ধারণ করে দিয়েছে। রাসায়নিকটির এই মাত্রার ব্যবহার কেবল মশা তাড়াতে কার্যকর, মারতে নয়।
 
কিন্তু কয়েল উৎপাদনকারী অবৈধ কোম্পানিগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত মাত্রার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি ‘একটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট’ রাসায়নিক ব্যবহার করছে।
সেমিনারে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, এসব কয়েলে মানবদেহে ক্যান্সার, শ্বাসনালীতে প্রদাহসহ বিকলাঙ্গতার মতো ভয়াবহ রোগ হতে পারে।

আমারহেলথ.কমের সম্পাদক ডা. অপূর্ব পণ্ডিতের সভাপতিত্বে সেমিনারে নিসপম-এর প্যারাসাইটোলজি বিভাগের প্রধান বে-নজীর আহমেদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ উইংয়ের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবীরুল বাশার, এসিআই-এর পরিচালক সৈয়দ আলমগীর ও বালাইনাশক মান নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সৈয়দ আরমান হায়দার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ সময়:১৬১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৬
এমএইচপি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।