ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিশ্ব ইজতেমা মাঠ

নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনায় প্রকল্প

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৬
নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনায় প্রকল্প ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা মাঠ। তাবলীগ জামাতের উদ্যোগে প্রতি বছর বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তাবলীগ জামাতের অনুসারী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা এতে অংশ নেন। তারা এখানে তাবলীগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শোনেন এবং ইসলামের দাওয়াত কাজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেওয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান।

বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে আসা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশের নানা সুরক্ষায় প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার।
 
‘টঙ্গী শহরে পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
 
মুসল্লিদের ওজু, গোসল ও পয়:নিষ্কাশনের কথা চিন্তা করেই এ উদ্যোগ। বিশেষ করে বিদেশী মুসল্লীরা টয়লেট, বাথরুম ও ওজুখানার সমস্যায় পড়েন। নিরাপদ পানি সরবরাহের কভারেজ বৃদ্ধি ও স্যানিটেশনের মাধ্যমে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব কমানোসহ বিশ্ব ইজতেমা চলাকালে পরিবেশ দূষণ রোধে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
 
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর(ডিপিএইচই)। তবে কয়েক ধাপে সময় ও ব্যয় বেড়েছে প্রকল্পের। মূল প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৯৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এখন প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। বর্তমানে প্রকল্পের সময় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০১৭ সালের জুন নাগাদ।
 
ডিপিএইচই’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী(পরিকল্পনা) তুষার মোহন সাধু খাঁ বাংলানিউজকে বলেন, দেশ-বিদেশ থেকে আসা লাখো মুসল্লির সার্বিক চাহিদা চিন্তা করেই প্রকল্পটি হাতে নিয়েছি। বিশ্ব ইজতেমার সময় সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়। এর পাশাপাশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের গোসল ও ওজুর জন্যও প্রচুর পানি দরকার।
 
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের আওতায় নতুন কিছু কাজ যুক্ত করা হয়েছে। যে কারণে প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ইতোমধেই ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি, ২০১৭ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পের সমস্ত কাজ সমাপ্ত হবে। এর ফলে বিশ্ব ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের উন্নত সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
 
প্রকল্পের আওতায় ২১টি টেস্ট টিউবওয়েল, ২১টি প্রডাকশন টিউবওয়েল, ৭টি প্রডাকশন টিউবওয়েল রিপ্লেসমেন্ট, ২১টি পাম্প হাউজ, ৪৫টি ইলেকট্রিক সাব স্টেশন, ২০টি তিনতলা টয়লেট ভবন, ৯৫ কিলোমিটার ডায়ার পাইপলাইন ও দুই কিলোমিটার পাইপলাইন পুন:স্থাপন করা হবে।
 
ইজতেমা মাঠে সাতটি টয়লেট সম্প্রসারণ, পাঁচ হাজার পানির মিটার, ১০টি পাবলিক টয়লেট, ১০০টি ওয়াটার পয়েন্ট, ৩০০টি লো-কস্ট স্যানিটারি ল্যাট্রিন স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
 
মাঠ পর্যায়ে চাহিদা ও বিশ্ব ইজতেমা সংক্রান্ত কমিটির চাহিদা অনুসারে অতিরিক্ত তিনটি নলকূপ ও ৩৫ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ইজতেমা ময়দানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় বলেই টয়লেট বিল্ডিংয়ের পূর্ত কাজে বিলম্ব হয়েছে। পূর্ত কাজের জন্য উপযুক্ত সময় নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত। এ তিনমাসে মাঠে পূর্ত কাজ করার জন্য কোনো অনুমতি পাওয়া যায়নি।
 
প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কিছু টাকা রয়ে গেছে। এ টাকা দিয়ে ইজতেমা মাঠের আরও কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে। পরীক্ষামূলকভাবে আরও কিছু গভীর নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে পানি পেতে সমস্যা না হয়।
 
তিনি বলেন, এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ইজতেমা ময়দানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ কারণে টয়লেট বিল্ডিংয়ের পূর্ত কাজে বিলম্ব হয়েছে। তবে সামনের সময়ে বিশ্ব ইজতেমা মাঠের সমস্ত কাজ শেষ হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।