ঢাকা: শিক্ষার বিস্তারে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শিক্ষার প্রসারে ধনী ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে কাজী মাহবুব উল্লাহ স্মৃতি পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সু-শিক্ষিত জাতি ছাড়া কখনও দেশ গড়া সম্ভব নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ গড়ে উঠবে কু-সংস্কারমুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায়। আমরা সেভাবে দেশকে গড়ে তুলতে চাই। এ লক্ষ্যে কাজও করে যাচ্ছি।
বিত্তবানদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজের বিত্তবানদের নিজ নিজ গ্রামের দিকে তাকাতে, এলাকার দিকে তাকাতে বলবো, মানুষকে সহযোগিতা করতে বলবে।
তিনি বলেন, বিত্তবানরা উচ্চ শিক্ষা প্রসারে এগিয়ে আসবেন, মেধাবীদের শিক্ষায় এগিয়ে আসবেন যাতে তারা দেশকে এগিয়ে নিতে পারে।
নিরক্ষরতা দূরীকরণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরতা হার ছিলো মাত্র ৪৫ ভাগ। আমরা ক্ষমতা নেওয়ার পর তা দ্রুত বেড়ে যায়। প্রতিটি জেলাকে নিরক্ষরমুক্ত করার জন্য কাজ করতে থাকি। ১৯৯৮ সালে অল্প সময়ের মধ্যেই স্বাক্ষরতার হার বাড়াতে পেরেছি।
দেশের গবেষণা খাতে অর্থ বরাদ্দের ব্যাপারে পূর্ববর্তী সরকারগুলোর অবহেলার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর দেখি গবেষণার জন্য কোনো বরাদ্দ ছিলো না। কিন্তু গবেষণা ছাড়া কোনো দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা তাই গবেষণায় বরাদ্দ বাড়িয়ে ছিলাম।
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। কেউ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে পারবে না।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ভাবে বাংলাদেশ যথেষ্ট সক্ষমতা অর্জন করেছে। আমরা বাজেট ৫ গুণ বৃদ্ধি করেছি। ২ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকা বাজেট বাংলাদেশ করবে এটা কখনো কেউ বোধ হয় ভাবতে পারেনি। আমাদের বার্ষিক কর্মসূচির ৯০ ভাগ আমরা নিজস্ব অর্থায়নে করছি।
যে বাংলাদেশকে নিয়ে স্বাধীনতার পর অনেকে হেয় প্রতিপন্ন করে কথা বলেছে, আজকে বাংলাদেশ আর সেই জায়গায় নেই। এটা সম্ভব হয়েছে কারণ আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি। যে সংগঠন গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে বিজয় এনেছে আজকে সেই সংগঠন সরকারে আছে বলেই, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে কাজ করছি বলেই উন্নয়নের ধারা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি।
এ বছর শিক্ষা ও গবেষণায় ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ চৌধুরীকে বিশেষ পুরস্কার হিসেবে আজীবন সম্মাননা, সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় আনিসুল হক, পাটের মলিকিউলার বায়োলজি বিষয়ে বিশেষ গবেষণার কারণে অধ্যাপক ড. হাসিনা খান, খেলাধুলায় ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজাকে পুরস্কার দেয়া হয়।
এটি বেগম জেবুন্নেছা ও কাজী মাহবুব উল্লাহ জনকল্যান ট্রাস্টের ২৭তম পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
বেগম জেবুন্নেছা ও কাজী মাহবুব উল্লাহ জনকল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান জোবায়দা মাহবুব লতিফের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য বেগম নিলুফার জাফরউল্লাহ।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৬
এমইউএম/আরআই