ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘গণতন্ত্র, নির্বাচন নাকি ক্ষমতা- কোনটা চায় বিএনপি?’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৬
‘গণতন্ত্র, নির্বাচন নাকি ক্ষমতা- কোনটা চায় বিএনপি?’ ছবি: রাজিব / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: কোন পথে হাঁটবে বিএনপি। গণতন্ত্র, নির্বাচন নাকি ক্ষমতা।

তা স্পষ্ট করতে হবে জনগণের কাছে। কারণ, ক্ষমতার পরিবর্তন হয়, জনগণের হয় না। তাই জনগণ এখন জানতে চায়, কী করবে, কী পরিবর্তন আনবে তারা।
 
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গণতন্ত্র ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন’ শীর্ষক সেমিনারে এসব মতামত তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা।
 
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা তুলে ধরে বিশেষজ্ঞরা বলেন, আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র। সরকারের এ অবস্থান থেকে বোঝা যায়, গণতন্ত্র থেকে সরে গেছে তারা।
 
বক্তারা বলেন, দেশের এ অবস্থা পরিবর্তনে সংস্কার অথবা বিপ্লবের প্রয়োজন। ব্যাপক জনসমর্থন ছাড়া সংস্কার বা আন্দোলন সম্ভব নয়। আর মানুষ এখন আর ক্ষমতাসীন এবং ক্ষমতা প্রত্যাসী কাউকেই বিশ্বাস করেন না।
 
সিএফএডি’র নির্বাহী পরিচালক সাবেক রাষ্ট্রদূত আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন আ স ম আব্দুর রব, বিএনপি ঘরানার বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক মাহাবুব উল্লাহ, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির, শমসের মবিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, সাবেক মন্ত্রী ইকবাল মাহমুদ টুকু, শামা ওবায়েদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল প্রমুখ।      
 
আ স ম আব্দুর রব সেমিনারে বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের মালিক এখন আর তা বিশ্বাস করার উপায় নেই। মানুষ কারো ওপর আর আস্থা রাখতে পারছেন না। নেতাকর্মীরাও দলের আদর্শ ও সিদ্ধান্তের প্রতি সন্দিহান। সে কারণে আর আন্দোলন হয় না।
 
‘জনগণকে তালাক দেওয়ার অধিকার না দিলে স্বেচ্ছাচার চলবে’- যোগ করেন আ স ম আব্দুর রব।
 
তিনি বলেন, মানুষ আর ভিক্ষা চান না। কোনো দলের (আওয়ামী লীগ-বিএনপি) আদর্শ নেই। এখন ঘরের ভেতর মিটিং করতেও পারমিশন লাগে। দেশটাকে ক্রীতদাস বানানোর জন্য স্বাধীন করিনি।  
 
অধ্যাপক মাহাবুব উল্লাহ বলেন, বিএনপিকে এখন সেই কর্মসূচি রূপরেখা তৈরি করতে হবে। জানাতে হবে, তাদের পরিকল্পনা কী? বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সহিংসতা না করে তারা আন্দোলন করে সফল হয়েছে।
 
তরুণদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দিয়ে মাহাবুব উল্লাহ বলেন, রাষ্ট্রের অকার্যকর প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে কার্যকর করবে, সংসদকে কীভাবে কার্যকর করবে তা বলতে হবে। পেটের মধ্যে চেপে রেখে আন্দোলন হবে না। এ দেশের মানুষ বার বার প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি রক্ষা হয়নি। তাই এখন আর নির্বাচনের (বিশ্বাসযোগ্য) কথা বলে লাভ নেই।
 
তিনি বলেন, দেশের অবস্থা পরিবর্তনে সংস্কার অথবা বিপ্লবের প্রয়োজন। জনগণের ব্যাপক সমর্থন না হলে সরকারের পরিবর্তন হয় না। জনগণ জানতে চায়, ক্ষমতায় গেলে কী পরিবর্তন করবে তারা।
 
বিভিন্ন বক্তা তাদের মতামত তুলে ধরে বলেন, বিএনপিকে স্পষ্ট করতে হবে, তারা কোন পথে হাঁটবে।
 
বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান সরকারের সমালোচনা করে বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রের নামে স্বৈরাচার চলছে।
 
তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, গণতন্ত্র কী জনগণের ক্ষমতায়ন নাকি, ক্ষমতার প্রতি জনগণের অনুমোদন?
 
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রের সন্ধান পাওয়া কঠিন। দেশের সর্বোচ্চ আইন (সংবিধান) যারা মানেন না, তাদের গণতান্ত্রিক দল বলবেন কেনো? দেশে সামরিক অথবা বেসামরিক স্বৈরশাসন চলে আসছে।
 
বিএনপি-আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এক রোগীকে আরেক রোগী চেপে ধরে কান্নাকাটি করলে রোগ সারে না, ডাক্তার লাগে। এ জন্য দেশে রাজনৈতিক বিকল্প শক্তি দরকার।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৬
এসএমএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।