ঢাকা: অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যপর্ণ নিয়ে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় জেলা প্রশাসকরা বাস্তবায়ন করছেন না বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
রায় অনুযায়ী সম্পত্তি অবমুক্ত না করে ভুক্তভোগীদের সমস্যা জিইয়ে রাখা ও নতুন নতুন পন্থায় তাদের হেনস্তা করারও অভিযোগ করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যপর্ণ: আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় বাস্তবায়ন না করে বরং তা কার্যকর না করতে আইন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা জারির প্রতিবাদ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, এএলআরডি, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, অর্পিত সম্পত্তি প্রতিরোধ আন্দোলন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যপর্ণ আইন বাস্তবায়ন জাতীয় নাগরিক সমন্বয় সেল, ব্লাস্টসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যপর্ণ আইনের সর্বশেষ সংশোধনী পাস ও ‘খ’ তফসিল বাতিল হয়।
এর মাধ্যমে অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক ৮০ শতাংশ ভুক্তভোগী ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার কথা থাকলেও দুর্নীতিগ্রস্ত ভূমি কর্মকর্তাদের কারণে তা হচ্ছে না।
সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। অসাধু এসব কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি আদালতের রায়কে উপেক্ষারও ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন।
ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, লালমনিরহাট, জয়পুরহাট, নরসিংদী, রাজবাড়ী, মাগুরা, কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ইতোমধ্যে বহু অভিযোগ এসেছে।
‘ক’ তফসিলভূক্ত সম্পত্তি প্রত্যপর্ণ আপিল বিভাগ মূল মালিক বা উত্তারাধিকার বা স্বার্থাধিকার বরাবরে প্রত্যপর্ণের রায় দিলেও জেলা প্রশাসকরা তা ফেরত দেননি।
ফেরত দেবেন কি-না তা সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চেয়েছেন। এমনকি মতামতের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন।
শুধু ভূমি মন্ত্রণালয় নয়, আইন বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছেন। আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে রিট করতে বলা হয়েছে যা রায়ের পরিপন্থী বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
নেতারা মনে করেন, আইন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা কার্যকর হলে বাংলাদেশের সকল জেলায় আপিল বিভাগ সম্পত্তি অবমুক্ত করার যে রায় দিয়েছেন, তা থমকে যাবে।
আপিল বিভাগের রায় কার্যকর না করে এর বিরুদ্ধে রিট করবেন বলে ভুক্তভোগীদের মৌখিকভাবে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা।
তারা অবিলম্বে আইন মন্ত্রণালয় থেকে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষে রিট আবেদনের নির্দেশনা প্রত্যাহারসহ ছয়টি দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সহ সভাপতি তবারক হোসেন, অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথ, এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ব্লাস্টের এস এম রেজাউল করিম, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের অ্যাডভোকেট আবু ওবায়দুল করিম প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৬
আরইউ/এএসআর