রাজশাহী: ‘একে তো তীব্র শীত, তার ওপর আবার বৃষ্টি। দু’য়ে মিলে স্বাভাবিক কাজকর্ম যেন থমকে দাঁড়িয়েছে।
হাড় কাঁপানো শীত আর বৃষ্টিতে দিনভর নানান ভোগান্তির গল্পগুলো বিরক্তির সুরে এভাবেই বর্ণনা করছিলেন রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল এলাকার বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুল হাই। তবে কেবল তিনিই নন, আবদুল হাইয়ের মতো অনেক সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ছন্দপতন ঘটিয়েছে বৃষ্টি ও শীত।
রাজশাহীতে মাঘের প্রথম সপ্তাহেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা। তার সঙ্গে মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরের এক পশলা বৃষ্টি আর ঠাণ্ডা বাতাস শীতের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ। এদিন তাপমাত্রা খুব একটা নিচে না নামলেও কনকনে ঠাণ্ডা অনুভব হচ্ছে।
গেলো ডিসম্বরে দুই দফা শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় উত্তরের শহর রাজশাহীর ওপর দিয়ে। তারপর খানিকটা হলেও স্বস্তি ফিরে নগরজীবনে। কিন্তু মাঘ মাস শুরুর পর থেকেই শীতের দাপট আবারও বাড়তে শুরু করে। আর মঙ্গলবারের বৃষ্টি যেন তার প্রতাপে পূর্ণতা এনে দিয়েছে। দিনভর কোথাও সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। হিমালয় ছুঁয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাস কাঁপিয়ে তুলছে উত্তর জনপদের ছিন্নমূল মানুষগুলোকে। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে পথে-ঘাটে থাকা এই মানুষগুলো আজ দুর্বিষহ দিন পার করছেন।
রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রাজিব খান বাংলানিউজকে জানান, আকাশে মেঘ রয়েছে। বৃষ্টিও হয়েছে। তাই দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে না নামলেও রাজশাহীজুড়েই তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজশাহীতে ২ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া বিকেল ৫টার পরও এক দফা বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ফলে দিনে এখন পর্যন্ত ৬ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টি হতে পারে রাতেও।
রাজিব খান জানান, আজ রাজশাহী মহানগরীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ ছিল ২২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিল সকাল ৬টায় ৯৭ শতাংশ এবং সন্ধ্যা ৬টায় ৯৫ শতাংশ।
রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, চলতি সপ্তাহ ধরেই তাপমাত্র ওঠা-নামা করছে। আজ বৃষ্টি হয়েছে। তবে কাল পরশুর মধ্যে আকাশে মেঘ কেটে গেলে শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে। জানুয়ারির শেষ দিকে এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। ওই সময় তাপমাত্রাও কমার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘন্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৬
এসএস/আইএ