রাজশাহী: হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিভ্রাট আর টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজশাহীর স্বাভাবিক জনজীবন।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর থেকে শুরু হয় বৃষ্টি।
এরমধ্যে কখনও গুঁড়ি-গুঁড়ি কখনও মুষলধারে থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে জনজীবনে দেখা দেয় চরম দুর্ভোগ।
এদিকে, টানা বর্ষণের সঙ্গে মঙ্গলবার রাত থেকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে এ দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে।
জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে মহানগীর অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। রাত ১টা বাজতেই পুরো মহানগরী অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এমনকি নিভে যায় সড়কবাতি। ভারী বর্ষণ ও ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে রাতে জরুরি কাজে বাইরে বের হওয়া মানুষদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
মহানগরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সময় লেগে যায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে বিদ্যুৎ থাকলেও বাইরে ওষুধ আনতে গিয়ে অন্ধকারে রোগীর স্বজনদের হয়রানির শিকার হতে হয়। এছাড়া গভীর রাতে রাজশাহী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশন এলাকায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষরা আটকা পড়েন।
এদিকে, রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপের চার্জ শেষ হয়ে পড়ায় অনেকেই বিপাকে পড়েন। রাতে চার্জ না দিতে পারায় সকাল থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল ছিল কম। এতে নগরবাসীর দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি পায়। এছাড়া বৃষ্টির কারণে সকাল থেকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কল-কারখানার শ্রমিকরা বৃষ্টির মধ্যে অলস সময় পার করেন।
রাজশাহী থেকে প্রকাশিত দৈনিক সোনালী সংবাদ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক আনোয়ারুল আলম ফটিক বাংলানিউজকে জানান, রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় জেনারেটর চালিয়ে পত্রিকা সংস্করণের কাজ করতে হয়েছে তাদের। ফলে পত্রিকা প্রকাশে দেরি হয়েছে।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আফরোজা খাতুন জানান, বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজশাহীতে ৪১ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি জানান, আকাশে এখনও মেঘ আছে। তাই আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আর তাপমাত্রা খুব একটা না কমলেও বৃষ্টির কারণে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। মেঘ কেটে গেলে শীতের পরিমাণ আরও বাড়বে। এ সময় রাজশাহীতে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, ধবার রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৬টায় ও দুপুর ১২টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৮ শতাংশ।
রাজশাহী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী সেখ মো. আলাউদ্দীন জানান, হঠাৎ করে ঝড়-বৃষ্টির কারণে তাদের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে গোলযোগ দেখা দেয়। কাটাখালি গ্রিডের ৩৩ কেভি মূল বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ট্রান্সফরমার ক্রাশ করায় রাতে গোটা নগরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
এরপরও বৃষ্টির মধ্যেই তাদের কর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে সারারাত কাজ করেন। এছাড়া অনেক স্থানে বিদ্যুতের লাইনের ওপরে গাছ ও ডালপালা পড়ে যাওয়ায় সেগুলো অপসারণ করতে হয়। তাই বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে দেরি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৬
এসএস/এসআর