ঢাকা: শুরু হলো নবম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। সুকুমার বৃত্তির চর্চায় শিশুদের উৎসাহিত করা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানোই এবারের চলচ্চিত্র উৎসবের অন্যতম লক্ষ্য।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকাল ৫টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সপ্তাহব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।
কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে দেশাত্মবোধক গান, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশেন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে ঢোল বাজিয়ে বৈচিত্র্য আনা হয়।
উদ্বোধন শেষে আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম।
এছাড়া চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম, চিলড্রেন ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মুনিরা মোরশেদ মুননী, প্রাণ আরএফএল গ্রুপের হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস একেএম মঈনুল ইসলামও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন উৎসব পরিচালক রায়ীদ ইসলাম ও উপ-উৎসব পরিচালক আবীর ফেরদৌস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র শুধু বিনোদন নয়, শিক্ষারও একটি বড় মাধ্যম। মনে রাখতে হবে চলচ্চিত্র শিক্ষার বাহন।
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে শিশুদের সুকুমার বৃত্তির চর্চায় উৎসাহী করে তুলতে হবে। কারণ আমরা শুধু উন্নত দেশই চাই না, উন্নত সমাজও চাই।
তিনি বলেন, দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সন্তানরা অর্থনৈতিকভাবে আরও এগিয়ে যাবে। তবে সুকুমার বৃত্তির চর্চা না থাকলে বাবা-মা, আত্মীয়দের কথা মনে রাখবে না তারা। তাই শিশুদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে।
‘শিশুদের সাংস্কৃতিক চর্চা ন্যূনতম পর্যায়ে চলে এসেছে। প্রতিটি জেলায় শিশু একাডেমি রয়েছে। কিন্তু সেখানে সাংস্কৃতিক চর্চা হচ্ছে না। শূন্য পড়ে থাকছে। ’
বেশিরভাগ অভিভাবকের অসচেতনতা, সীমাবদ্ধতা ও মানসিকতার দিকে ইঙ্গিত করে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমরা যেন শিশুদের মুখ বইয়ের পাতায় ঠেসে রাখতে চাই। চলচ্চিত্র বলতে শিশুদের দেখানো হয় ডোরেমন কার্টুন। যদিও অনেক কষ্টে বাংলা কার্টুনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এবারের আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটসহ দেশের ১৫টি ভেন্যুতে বিশ্বের ৩০টি দেশের দেড় শতাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
প্রথমদিন সন্ধ্যায় অতিথিদের প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর উদ্বোধনী আলোচনা ও জার্মানির চলচ্চিত্র ‘মাই ফ্রেন্ড রাফি’ প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়- উদ্বোধনের দিন ছাড়াও মূল উৎসব কেন্দ্রে প্রতিদিন সকাল ১১টা, দুপুর ২টা, বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৬টায় মোট চারটি করে চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
উৎসবের তৃতীয় দিন ২৬ জানুয়ারি সকাল ১১টায় জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে ‘শিশুদের উপর নির্যাতন’ শীর্ষক সেমিনার।
পরদিন ২৭ জানুয়ারি একই জায়গায় চলচ্চিত্র বিষয়ে কর্মশালা করবেন নির্মাতা অমিতাভ রেজা।
উৎসবের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হবে ২৯ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তনে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ৩২০১৬
এসএমএ/আরএইচ