ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘জোয়ারি’র সুরে মন্ত্রমুগ্ধ ১০ মিনিট

মোস্তফা ইমরুল কায়েস, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৬
‘জোয়ারি’র সুরে মন্ত্রমুগ্ধ ১০ মিনিট ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: হৃদয় তীরে ঢেউ আছড়ে পড়ছিলো আর শীতল করে দিচ্ছিলো মন। তবে এ ঢেউ সাগরের জলরাশির নয়।

নতুন আবিষ্কৃত বাদ্যযন্ত্র জোয়ারির সুরের ঢেউ।

বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আট দিনব্যাপী পিঠা উৎসবে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সাঙ্গপাঙ্গ’ বাদ্যযন্ত্র জোয়ারির মন্ত্রমুগ্ধ পরিবেশনায় আবিষ্ট করে রাখে উপস্থিত শ্রোতাদের।

নতুন এ বাদ্যযন্ত্রের নামটা যেমন ব্যতিক্রমী, তেমনি কাজের ক্ষেত্রেও এটা ব্যতিক্রম। তালে তালে ঢেউ তুলে জোয়ার সৃষ্টি করে বলেই এ বাদ্যযন্ত্রের নাম জোয়ারি।

জোয়ারির সুরকে আরও শ্রুতিমধুর করতে তাল মেলাচ্ছিলো ট্যাম্বরিম। গানের মধ্যে ঢোলের বিকল্প হিসেবে এর ব্যবহার এই প্রথম।  
মাত্র দশ মিনিটের এই পরিবেশনা সবার হৃদয় ছুঁয়েছে। জোয়ারি যন্ত্রটি বাজাচ্ছিলেন বাদক আহসান হাবিব। সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছিলেন আর হর্ষধ্বনি করছিলেন।

পরিবেশনায় ছিলো মাত্র একটি গান। আর সেই গানের পুরো অংশ জুড়েই ছিলো জোয়ারির মায়াময় সুরের খেলা। কাফি ও বিলওয়াল রাগের সংমিশ্রণে ফোক গানের আদলে ছিলো সুর।

জোয়ারির স্বপ্নদ্রষ্টা স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষক আহসান হাবিব। অনেক বছর ধরেই তিনি এমন একটি যন্ত্র আবিষ্কারের স্বপ্ন দেখছিলেন। অবশেষে ‘জলের গানের’ শিল্পী ও যন্ত্রবাদক কনক আদিত্য তার আবিষ্কৃত এই যন্ত্র গানে ব্যবহার করেন। তবে যন্ত্রটি নিয়ে আহসান হাবিবের এটাই ছিলো প্রথম পরিবেশনা। আর প্রথম পরিবেশনায়ই সবার মন জয় করে নিলো জোয়ারি।

জোয়ারিতে গ্রিক যন্ত্র বোজুকির দু’টি তার, গিটারের চারটি, সেতারের চারটি ও শরদের দু’টি মিলে মোট ১২টি তারের ব্যবহার করা হয়েছে।

আহসান হাবিব জানান, সম্প্রতি তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রছাত্রী নিয়ে তৈরি করেছেন ফোক গানের দল সাঙ্গপাঙ্গ। মাত্র দেড় দিনের প্রস্তুতি নিয়ে তিনি এই পরিবেশনায় অংশ নিয়েছেন। যে গানটি পরিবেশন করেছেন, এর কথা ও সুর তার নিজেরই করা।

যখন তিনি জোয়ারিতে সুর তুলছিলেন, তখন উৎসবের বিভিন্ন স্টলে থাকা দর্শনার্থীরাও ছুটে আসতে লাগলেন মঞ্চের দিকে।
কাহারবা ও চাটির খেলা ছিলো পুরো পরিবেশনায়। অপূর্ব তাল মিলিয়ে ওঠা-নামা করছিলো সুর। ‘এ দুনিয়াটা রঙ্গিলা এক কারখানা, রঙ্গে ডুবাই, রঙ্গে ভাসাই, রঙ্গে করি তালকানা’- শিল্পী হৈমন্তি যখন এই গানটা গাইছিলেন তখন এর সঙ্গে যন্ত্রটির ছিলো অপূর্ব সমন্বয়।

মাত্র ১০ মিনিটের চমৎকার এই পরিবেশনা আরও কিছু সময় এ সুরে ভাসার ইচ্ছা জাগিয়ে তুলেছে শ্রোতাদের।

গানে কণ্ঠ দেন সাঙ্গপাঙ্গ’র ড্যানিয়েল রহমান ধ্রুব ও কাজী মেহেরুন হৈমন্তি। ট্যাম্বরিম বাজিয়েছেন অন্তু ও ইমরান। এরা সবাই আহসান হাবিবের ছাত্রছাত্রী।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৬
এমআইকে/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।