বগুড়া: বগুড়ায় এসিডে ঝলসে যাওয়া গৃহবধূ পূর্ণিমা (২০) টানা ২৮ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়াই করে অবশেষে মারা গেছেন।
তিনি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার বেলোয়া চৌধুরীপাড়ার রবিউল ইসলামের মেয়ে।
শুক্রবার (২৯ জুনয়ারি) ভোরে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
শহরের ছিলিমপুর ফাঁড়ি পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম বাংলানিউজকে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গৃহবধূ পূর্ণিমার মুখে এসিড নিক্ষেপ করা হয়েছিল। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আসলাম আলী বাংলানিউজকে জানান, গত ১২ জানুয়ারি পূর্ণিমার মুখে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় এখনও তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
নিহতের স্বজনরা জানান, প্রায় দুই বছর আগে বগুড়া সদর উপজেলার মাটিডালী হাজীপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে সুমনের সঙ্গে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার বেলোয়া চৌধুরীপাড়ার রবিউল ইসলামের মেয়ে পূর্ণিমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে এক ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। যার নাম আদির। বর্তমানে তার বয়স সাত মাস।
তারা আরও জানান, বিয়ের সময় পূর্ণিমার বাবা সুমনকে নগদ ৮০ হাজার টাকা যৌতুক দেন। এছাড়া, প্রায় ৬০ হাজার টাকার বিভিন্ন আসবাপত্র কিনে দেন। বিয়ের তিন মাস যেতে না যেতেই সুমন শ্বশুরের কাছে আরও ১০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন। তবে শ্বশুর সেই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। আর এই টাকার জন্য সুমন ও তার মা সুলতানা বেগম মিলে পূর্ণিমার ওপর নির্যাতন শুরু করেন। প্রায়ই তাকে মারধর করতে থাকেন।
স্বজনদের অভিযোগ, গত ১ জানুয়ারি সুমন ও তার মা মিলে নির্যাতনের একপর্যায়ে জোর করে পূর্ণিমার মুখে এসিড ঢেলে দেন। এতে পূর্ণিমার অবস্থা গুরুতর হলে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর সেখানেই তিনি মারা যান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৬
এমবিএইচ/টিআই