বগুড়া: বগুড়ায় ‘করতোয়া নদী দখল ও দূষণ বিষয়ে আদালতের আদেশ অবহিতকরণ’ শীর্ষক কমিউনিটি পরামর্শ সভা করা হয়েছে।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের চেলোপাড়াস্থ চাষীবাজার করতোয়া মাঠে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী কার্যালয়ের সমন্বয়কারী তন্ময় কুমার সান্যালের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের বগুড়া ব্যুরো চিফ হাসিবুর রহমান বিলু, স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক জিয়াউর রহমান, গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
সভায় উত্তর চেলোপাড়া, দক্ষিণ চেলোপাড়া, বউবাজার, ছিলিমপুর, নারুলী, মালতিনগর, জলেশ্বরীতলার প্রায় ৩০ জন কমিউনিটি প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
সভায় বক্তারা বলেন, কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে বগুড়া এবং গাইবান্ধা জেলার ওপর দিয়ে বহমান করতোয়া নদীকে দখল ও দূষণ করে আসছে। ফলে নদীটির স্বাভাবিক প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে মানুষ নদীর পানি গৃহস্থালি ও কৃষিকাজে ব্যবহার করতে পারছেন না। নদীর মাছসহ অন্যান্য জলজপ্রাণীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক প্রজাতির দেশীয় মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। এসব কারণে এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ বিপন্ন প্রায়।
সভায় বেলা’র রাজশাহী কার্যালয়ের সমন্বয়কারী তন্ময় কুমার সান্যাল বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে নদীর সীমানা নির্ধারণসহ দখল ও দূষণ থেকে বাঁচাতে সংগঠনের পক্ষ থেকে তারা হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন (রিট নং ৬৫০১/২০১৫)।
রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত করতোয়া নদীর ১১৬ কিলোমিটার পানিপ্রবাহ এলাকা ও সীমানা নির্ধারণপূর্বক গোবিন্দগঞ্জের খুলশী স্লুইসগেটসহ অন্যান্য অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে কেন নদীটির পানিপ্রবাহ আগের অবস্থায় ফিরে আনতে নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে বিবাদীদের প্রতি রুল জারি করেছেন।
পাশাপাশি করতোয়ায় সব ধরনের বর্জ্য ফেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বগুড়া পৌরসভাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের কাঁটাখালির খুলশীতে করতোয়ার উৎসমুখে পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মিত স্লুইসগেট উন্মুক্ত করা ও এ স্লুইসগেটের পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণপূর্বক আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ প্রদান করেন আদালত।
পাশাপাশি আদালতের এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়টি তদারকির জন্য পরিবেশ অধিদফতরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
কিন্তু আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও করতোয়া দখল ও দূষণমুক্ত করতে তেমন কোনো উদ্যোগ এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি। অবিলম্বে করতোয়ার স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করতে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সভা থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৬
এমবিএইচ/এএসআর