ঢাকা: ২০১৭ সাল থেকে দুদকে কর্মরত সব কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন।
শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস-২০১৬ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা সব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির দুর্নীতি সন্ধানে কাজ করছি। কিন্তু অনেক স্থানে গিয়ে শুনতে হয় আমাদের কর্মকর্তারাও নাকি দুর্নীতি করেন। তাই ভবিষ্যতে যেন কোথাও গিয়ে আর এই কথা শুনতে না হয়, সেজন্য ২০১৭ সাল থেকে সব কর্মকর্তাদের সম্পদের বিবরণী দুদকে দাখিল করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সুশাসন বা দুর্নীতি সংক্রান্ত সূচকে দেশ পিছিয়ে আছে। আমরা দেশব্যাপী প্রায় ৩৩টি গণশুনানি, ১১টি মতবিনিময় সভা করেছি। সেখান থেকে জানতে পেরেছি, জনগণ দুর্নীতি এবং হয়রানি মুক্তভাবে তাদের সেবা পাচ্ছেন না। টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন অংশীদারিত্ব।
এছাড়া জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলপত্র অনুসারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানেরই দায়িত্ব। জনগণের কাছে আমাদের সবার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাও থাকতে হবে। এজন্য দুদকের সব কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে হবে।
অর্থপাচারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমাদের দেশে ট্রেড বেইজড অর্থপাচার বেশি ঘটে। তাই দুদক, এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংক যৌথভাবে কাজ করতে পারে। এক্ষেত্রে ইউএনডিপির কারিগরি সহায়তা প্রয়োজন। তাহলে অর্থপাচার রোধে সাফল্য আনা সহজ হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার সময় দু’জন বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অর্জন তথা উন্নয়ন অসাধারণ। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক রূপান্তর এবং দুর্নীতি দমন পারস্পরিকভাবে একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
তিনি আরো বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন অনেক ভলো কাজ করছে। তবে আমার মনে হয়, তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে দুর্নীতি বিরোধী গণসচেতনতা সৃষ্টি করা। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থপাচার রোধ করাই দুর্নীতি দমন কমিশন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলে যোগ করেন ফরাস উদ্দিন।
জনগণ দুদকের কর্মকাণ্ডের সাফল্যের হার জানতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, তারা জানতে চায় কতগুলো অভিযোগের অনুসন্ধান হল, অনুসন্ধান থেকে কতগুলো মামলা হলো, কতগুলো চার্জশিট এবং চূড়ান্ত বিচারে কী সাফল্য পাওয়া গেল?
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, কমিশনার (তদন্ত) এএফএম আমিনুল ইসলাম, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জ্জী, দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) ড. শামসুল আরেফিন ও কমিশন সচিব আবু মোস্তফা কামাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৬
এসজে/এসএইচ