নড়াইল: ক্রিকেটার মাশরাফির নামে চিত্রা সেতুর নামকরণের দাবি জানিয়েছেন নড়াইলবাসী।
নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হচ্ছে নড়াইলবাসীর স্বপ্নের এই সেতুর কাজ।
এরই মধ্যে সেতুটির নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনার ঝড়। জেলার সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মহলের দাবি, চিত্রা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুটির নাম হোক বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে ক্রিকেটের সফল অধিনায়ক নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত মাশরাফি বিন মর্তুজার নামে।
বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আন্দোলনের ঝড় উঠেছে।
নড়াইল সদর উপজেলার শাহবাদ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন পান্না বাংলানিউজকে বলেন, মাশরাফি শুধু নড়াইলের নয়, তিনি আমাদের দেশের গৌরব। তার সফল নেতৃত্বের জন্য আমাদের দেশের ভাবমূর্তি বিশ্বের বুকে উজ্জ্বল হয়েছে। তার নামে সেতুটির নামকরণ হলে এই সেতুর মাধ্যমেই আমাদের জেলা বেশি পরিচিতি লাভ করবে বিশ্বের বুকে।
নড়াইল ডিজিটাল লাইব্রেরির প্রশিক্ষক ও ফ্রিল্যান্সার মাসুম বিল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, মাশরাফি যে নদীতে ছোট বেলায় সাতার কেঁটেছেন, যে নদীকে ঘিরে তার হাজারও স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। সেই ঘাটেই আজ সেতু নির্মাণ করছে সরকার। আশা করছি, সেতুটির নামকরণ মাশরাফির নামেই হবে।
তিনি আরো বলেন, মাশরাফির নামে সেতুটি নামকরণের দাবির জন্য প্রয়োজনে আমরা আন্দোলন করবো।
সিনিয়র সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম তুহিন বলেন, স্থানীয় সেতু স্থানীয় গুণীজনদের নামেই করা উচিত। এরই মধ্যে নড়াইলের সব কৃতি সন্তানদের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়েছে। তবে মাশরাফির নামে নড়াইলে আজ পর্যন্ত কোনো কিছুরই নামকরণ করা হয়নি। আশা করছি, সেতুটি মাশরাফির নামেই হবে।
নড়াইল জেলা উন্নয়ন কমিটির নেতা কাজী হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সেতু নির্মাণের জন্য নড়াইলবাসী এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করেছে। সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় অল্পদিনের মধ্যে সেতুটি সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
সেতুটি মাশরাফির নামে করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বাস্তবায়নে ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল থেকে নড়াইলের পুরাতন ফেরিঘাটে ২৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৪০ মিটার দীর্ঘ চিত্রা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূল ব্রিজের দৈর্ঘ্য ১৪০ মিটার হলেও ফ্লাইওভারের মতো দেখতে ভায়াডাক্টের দৈর্ঘ্য ২৪০ মিটার। ভায়াডাক্ট দেখতে অনেকটাই ফ্লাইওভারের মতো হওয়ায় ব্রিজটি নড়াইলের শোভাবর্ধন করবে।
২০১৭ সালের জুন মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের আন্তরিকতায় আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। ব্রিজটি চালু হলে জেলার অন্তত সাত লাখ মানুষ চলাচলের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে।
নড়াইল জেলা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোতালেব বিশ্বাস বাংলানিউজকে জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। তবে নামকরণের ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত যানা যায়নি।
নড়াইল জেলা প্রসাশক মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ বাংলানিউজকে বলেন, সেতুটির নামকরণের জন্য আমরা অন্য একটি নাম ঢাকায় পাঠিয়েছি। তবে ঢাকা থেকে যে নামে চিঠি আসবে সেতুটি সেই নামেই হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৬
এনটি/এসআই