আশুলিয়া, সাভার: প্রস্তুত রয়েছে লাল সবুজের গালিচার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা সাত স্তম্ভের স্মৃতিসৌধ। এখন ৪৫তম বিজয় দিবস উদযাপনের জন্য মাত্র কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা।
তাই প্রস্তুতির কোন ঘাটতি রাখেনি সাভার গণপূর্ত বিভাগ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সবুজে ঘেরা ১০৮ হেক্টর জমির ওপর নির্মিত স্মৃতিসৌধ এলাকাটি গণপূর্তর কয়েকশ’ কর্মীর নিরলস পরিশ্রমে পেয়েছে এক নতুন রূপ। স্মৃতিসৌধ চত্বরের চারপাশে টবে টবে শোভা পাচ্ছে রঙিন ফুল। ছোট্ট গাছের সারিতে তৈরি করা হয়েছে লাল সবুজের পতাকা। রঙের তুলিতে স্থাপনাগুলো সেজেছে নতুন রূপে। এবার আধুনিক যন্ত্রপাতিতে ধুয়ে মুছে চকচকে করা হয়েছে স্মৃতিসৌধ চত্বরের প্রতিটি স্থাপনা। এখন শুধু অপেক্ষা শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর।
১৬ ডিসেম্বরের প্রথম প্রহরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ বেদীতে বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপ্রতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই সাভার জিওসি ৯ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়েছে গার্ড অব অনারের জন্য তিন বাহিনীর কুচকাওয়াজ ও গাড়ি বহরের মহড়া। সম্পন্ন প্রক্রিয়াটি সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করছে সাভার জিওসি নবম পদাতিক ডিভিশনের মেজর জেনারেল ওয়াকার-উজ্জামান।
১৬ই ডিসেম্বর সকাল ৬টা ২৭ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ও ৬টা ২৯ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রবেশ করবেন। এরপর ৬টা ৩৪ মিনিটে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপ্রতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় ২৪ ফ্লিড রিজিমেন্টের মেজর ওয়ালিদের নেতৃত্বে তিন বাহিনীর একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করবেন। সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি ও মহড়া সম্পন্ন করছে তিন বাহিনী।
রাষ্ট্রপ্রতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদায়ের পর সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এতে লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে স্মৃতিসৌধ এলাকায়। তাই নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বসানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা।
এসএসএফ ছাড়াও নেওয়া হয়েছে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য মাঠে থাকবে গোয়েন্দা পুলিশ, থানা পুলিশ, সাদা পোশাকে পুলিশ, র্যাব, এসএসএফ এর সদস্যরা।
সাভার সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান ফিরোজ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রতি বছর সাফল্যের সঙ্গে নিরাপত্তা দিয়ে এসেছি। এবারও চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। কোন রকম তুচ্ছ ঘটনাকেও ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের পুলিশ বাহিনীর সাড়ে তিন হাজার সদস্য মাঠে কাজ করবে। যেকোন সমস্যা মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছি আমরা। এবারও স্মৃতিসৌধ এলাকাটি অপরুপ সাজে সাজানো হয়েছে।
সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, স্বাধীনতার ৪৫তম বিজয় দিবস উদযাপনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। এ দিন রাষ্ট্রপ্রতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিরোধীদলীয় নেত্রী, বিএনপি চেয়ারপার্সন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সহ বিভিন্ন স্তরের লাখ লাখ মানুষ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এ দিনটিকে ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
আরএ