শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) ব্যাংককে আপটাভুক্ত দেশগুলোর চতুর্থ মিনিস্টেরিয়াল কাউন্সিল সভায় এ কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আপটাভুক্ত দেশগুলোতে বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং এসডিজি অর্জনে সহায়ক হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. আব্দুল লতিফ বকসী বাংলানিউজকে জানান, এ সভার সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আপটার ভবিষ্যৎ কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে হবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে পণ্য বাণিজ্যে শুল্ক সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি সেবাখাত, বিনিয়োগ এবং ট্রেড ফেসিলিটেশন বিষয়ে ২০০৯ সালে স্বাক্ষরিত ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি দ্রুত কার্যকর করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘রূপকল্প-২০২১’ অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
বাণিজ্য মন্ত্রী বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী চিন্তা ও যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের জিডিপি অর্জন ৭.১১ ভাগ, মানুষের মাথাপিছু আয় ১৪৬৬ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে।
একসময় যারা বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে আখ্যায়িত করেছিল, আজ তারাই বলছে বাংলাদেশ মিরাকল। নিজ অর্থায়নে বাংলাদেশ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। দেশের ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে, বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
আপটার চতুর্থ রাউন্ড নেগোসিয়েশনের আওতায় বাংলাদেশ ৫৯৮টি পণ্যে ১০ থেকে ৭০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশের জন্য আরও ৪টি পণ্যে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ, চীন ২,১৯১ টি পণ্যে ৫ থেকে ১০০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য আরও ১৮১টি পণ্যে ০ থেকে ১২.৫ শতাংশ, ভারত ৩,৩৩৪টি পণ্যে ৫ থেকে ১০০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ১৪ থেকে ১০০ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া ২,৭৯৬টি পণ্যে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৯৬১টি পণ্যে ২০ থেকে ১০০ শতাংশ, শ্রীলংকা ৫৮৫টি পণ্যে ৫ থেকে ৬২.৫ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৭৫টি পণ্যে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ, লাওস ৯৯৯টি পণ্যে ২০ থেকে ৩৭.৫ শতাংশ, এবং মঙ্গলিয়া ৩৩৩টি পণ্যে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ শুল্ক ছাড় দেবে।
আপটা সদস্য হিসেবে মঙ্গোলিয়ার অন্তর্ভুক্তি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। এর ফলে বাংলাদেশ সর্বাধিক বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করার সুযোগ পাবে।
১৯৭৫ সালে এশিয়া প্যানপ্যাসিফিক অঞ্চলের সর্বপ্রথম প্রাধিকারযোগ্য বা প্রিফেনশিয়াল বাণিজ্য চুক্তি (ব্যাংকক অ্যাগ্রিমেন্ট) স্বাক্ষরিত হয়। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যাংকক অ্যাগ্রিমেন্ট পুণঃগঠন করে আপটা স্বাক্ষরিত হয়। আপটা মিনিস্টেরিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে শুল্কসুবিধাসহ চতুর্থ রাউন্ড নেগোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আগামী ১ জুলাই তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
চতুর্থ মিনিস্টেরিয়াল কাউন্সিল সভায় বিগত প্রায় ৭ বছর নেগোসিয়েশনের পর সমঝোতা স্বাক্ষর হয়। সভার সভাপতি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আপটার সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে অভিনন্দন জানান।
সভায় শ্রীলংকার বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী রিশাদ বাথিউডেন, লাওসের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী খিম্মানি ফলসিনা, দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থপ্রতিমন্ত্রী সেং মোক চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নিং ফুকুই, ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ভাগওয়ান্ট সিংবিশনই এবং মঙ্গোলিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত টুগসবিলগুন তুমুর্কহুলেজ নিজেদের দেশের পক্ষে বক্তব্য রাখেন এবং আপটার টেরিফ কনসেশন, নন-টেরিফ মেজার্স ও রুলস অফ অরিজিন সংক্রান্ত ওয়েব পোর্টাল উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৭
এসএস/এমজেএফ