শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, শাড়ি, থ্রি-পিস, থান কাপড়, চাঁদর, বিছানার চাঁদর, কম্বল, জুতা, টি-শার্ট, শীতবস্ত্র,ইমিটেশনের গহনা, কাঁচ-সিরামিকের বাসনপত্র, সিলভারের হাড়ি-পাতিল, লোহা-কাঠের জিনিস, কাঁচা তরকারি সবই রয়েছে ফুটপাতের এ মার্কেটে। আর এগুলো কেনাবেচা চলে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
এই মার্কেটে একটি শীতের পোশাক ১০ টাকায়ও কিনতে পাওয়া যায়। হকাররা বিক্রি করছে সুরে সুরে ‘বাইছা লন ১০টা। একদামের মাল ১০ টাকা। ’ ১০ টাকা থেকে শুরু করে ২ হাজার, আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত শীতের পোশাকও রয়েছে। ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে জিন্স প্যান্ট।
২০০ টাকায় কম্বল, ১৫০ টাকায় চাঁদর পাওয়া যায় মার্কেটটিতে। বিছানার চাঁদর বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১২শ’ টাকা পর্যন্ত। সুঁতি থেকে শুরু করে হাতের কাজ করা থ্রি-পিস ২০০ থেকে ১৪শ’ টাকার মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। ইমিটেশনের নাক ফুল, কানের দুল, গলার হার, চুড়ি, ব্যাচলেট বিক্রি হচ্ছে নানা দামে। তবে, শীতবস্ত্র, থ্রি-পিস আর বিছানার চাঁদরের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি দেখা গেছে।
ছুটির দিন হওয়ায় সকালে বিক্রি হয় তুলনামূলক কম। তবে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ মার্কেটে ক্রেতাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে, বাড়ে বিক্রিও। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড়ে পা ফেলাই যেন মুশকিল হয়ে পড়ে! তবে, এ মার্কেটে নারী ক্রেতাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করার মতো।
সেখানে কথা হয় ফল বিক্রেতা কিতাবুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এখানে ধনী গবিব সব শ্রেণির মানুষ আসে। কারণ এখানে এমনও কিছু পণ্য পাওয়া যায়, যা অনেক ভালো মার্কেটেও একসঙ্গে পাওয়া যায় না।
১৯৮৫ সাল থেকে হকার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ইব্রাহিম মিয়া। তিনি বলেন, ‘ব্যবসা করে ভালোই আছি। তবে, আমরা গাইট কিনি, তাই লাভ কম। যারা লট কিনে তাদের লাভ বেশি। ’
লোহার জিনিস বিক্রেতা বিল্লাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার দোকান আছে মুগদায়। হলিডে মার্কেটে অস্থায়ী বসি তাও চার পাঁচ বছর হবে। এখানে আমি লোহার কড়াই, বটি, রুটি ভাজার তাওয়া, রুটি বানানোর বেলুন ফিরি, ছেচনি বিক্রি করছি। আমার বেচাকেনা ভালোই হয়। ’
টি-শার্ট বিক্রেতা রমজান আলী বাংলানিউজকে বলেন, এখানে সব শ্রেণির মানুষই আসে। শুধু ভদ্র লোক না, চোর ছেচ্চররাও আসে। সময় পেলেই তারা যেকোনো জিনিস নিয়ে হাঁটা ধরে।
কথা হয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শামীমা আক্তারের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এখানে আসার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সব ধরনের নিত্যপণ্য জিনিস পাওয়া যায়। তাছাড়া এখানে জামা কাপড় থেকে শুরু করে অন্যান্য যে জিনিসগুলো আছে, সেগুলোর দাম অন্য মার্কেটের থেকে অনেক কম। আর এখানে কম দামি, বেশি দামি সব ধরনের জিনিস আছে। যে যার সাধ্য মতো কিনতে পারছে।
কলেজছাত্র সোহান ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি ছাত্র মানুষ। এখানে কম দামে ভালো ভালো জামা কাপড় পাওয়া যায়, তাই এখানে আসি। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৭
এমএইচকে/পিসি