ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বেসিকের বাচ্চুকে আবার দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৭
বেসিকের বাচ্চুকে আবার দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুককে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ

ঢাকা: বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দ্বিতীয়বারের মতো ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুদক। 

বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।  

আবদুল হাই বাচ্চুকে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

গতমাসের ২৩ নভেম্বর দুদক আবদুল হাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে। কমিশনের পরিচালক জায়েদ হোসেন খান ও সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি বিশেষ টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।  

এরআগে সোমবার ( ৪ ডিসেম্বর) তাকে প্রথম জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।  

দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়াত্ত বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর দীর্ঘ ৪ বছর অনুসন্ধান শেষে ২০১৫ সালের ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশান, পল্টন ও মতিঝিল থানায় ৫৬টি মামলা দায়ের করে দুদক।

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির মামলাগুলোর ১৫৬ জন আসামির মধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা ২৬ জন। বাকি ১৩০ জন আসামি ঋণগ্রহীতা ৫৪ প্রতিষ্ঠানের মালিক ও সার্ভে প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে ৪৮টি,  ডিএমডি ফজলুস সোবহানকে ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থকে ২৩টি এবং ডিএমডি এ মোনায়েম খানকে ৩৫টি মামলায় আসামি করে দুদক।

এদিকে বেসিক ব্যাংকের অর্থ লোপাটের ঘটনায় দুদকের দায়ের করা ৫৬টি মামলার মধ্যে একটি মামলায় গত ২৬ জুলাই হাইকোর্ট বাচ্চু এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের ওই আদেশে বলা হয়েছিল, প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে মামলার তদন্ত শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে।

এছাড়া চলতি বছরের আগস্টে বেসিক ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় দুদকের দায়েরকৃত ৫৬টি মামলার মধ্যে পাঁচটি মামলার চার্জশিট অনুমোদন দেয় কমিশন। তবে ৫টি মামলার কোনোটির তদন্ত প্রতিবেদনে বাচ্চুর নাম ছিলো না, এমনকি রাখার জন্য সুপারিশও করেনি তদন্ত কর্মকর্তারা। ফলে পাঁচটি মামলার অভিযোগপত্রে থেকে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর নাম ছিলো না।

এদিকে বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারিতে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে বলে ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সংসদে জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এমনকি চলতি বছরের ২৯ মার্চ এক অনুষ্ঠানেও দুদক চেয়ারম্যানের সামনে অর্থমন্ত্রী বলেন, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঋণ জালিয়াতিতে অর্থমন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চু জড়িত। আর সেই রিপোর্ট দুদকের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে পরবর্তীতে দুদক চেয়ারম্যানের কাছে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি এমন কোনো প্রতিবেদন পাননি বলে প্রতিবেদককে জানান।

এমনকি অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিও বলেছে পৃথক দু’টি অডিট ফার্মের নিরীক্ষা প্রতিবেদনসহ সার্বিক বিবেচনায় শেখ আবদুল হাই বাচ্চু দায় এড়াতে পারেন না। তার দুর্নীতির সব ধরনের তথ্য দুদকের হাতে রয়েছে।

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি ড. আবদুর রাজ্জাক বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি দু’বার মতামত চাইলেও দুদকের পক্ষ থেকে কোনো মতামত পাননি তিনি। এমনকি বেসিক ব্যাংক নিয়ে ৫৬টি মামলা দায়ের করা হলেও কোনো মামলায় নেই বাচ্চুর নাম।

**জিজ্ঞাসাবাদে অসুস্থ হয়ে পড়লেন বেসিকের বাচ্চু
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৭
এসজে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।