হেলালকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ দাবি করেছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, ‘হেলাল উদ্দিনই এ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী।
‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, চাঁদাবাজি বা অর্থ লুট নয়, সিদ্দিক মুন্সিকে হত্যা করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। তবে কি কারণে হত্যা করা হয়েছে, সে বিষয়টি খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে’।
মঙ্গলবার (০৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে যৌথ অভিযান চালিয়ে গুলশানের কালাচাঁদপুর এলাকা থেকে ৫টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ হেলাল উদ্দিনকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ বিষয়ে জানাতে বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলন মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সাতদিন আগে প্রবাসী বন্ধুর কাছ থেকে নির্দেশনা পান হেলাল উদ্দিন। ব্যবসায়ী সিদ্দিক হত্যাকাণ্ডে অপারেশনাল কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার সঙ্গে আরও পাঁচজনের মধ্যে সরাসরি কিলিং মিশনে চারজন অংশ নেন।
ব্যবসায়ী সিদ্দিক মুন্সির সঙ্গে আগে পরে হেলালের কোনো সম্পর্ক ছিল না বলেও জানান তিনি।
প্রবাসী সন্ত্রাসী বন্ধুর নাম তদন্তের স্বার্থে কৌশলগত কারণে প্রকাশ করা যাচ্ছে না উল্লেখ করে সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান বলেন, ‘তবে তিনি ছাত্রদলের একজন নেতা। তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত হেলালও ছাত্রদলের মধ্যম সারির নেতা। এর আগে হেলাল তার প্রবাসী সন্ত্রাসী বন্ধুর নির্দেশে বাড্ডায় ফোর মার্ডার করেছেন বলেও আমরা তথ্য পেয়েছি’।
মনিরুল বলেন, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হেলাল পুলিশকে জানিয়েছেন, ব্যবসায়ী সিদ্দিক হোসেন হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি নিজে উপস্থিত ছিলেন, তবে সরাসরি অংশ নেননি। এ হত্যাকাণ্ডে ৬টি অস্ত্র ও ২৫/২৬ রাউন্ড গুলি ব্যবহার করেছেন হত্যাকারীরা। হত্যার পর অস্ত্রগুলো হেলালের কাছে জমা ছিলো। এর মধ্যে ব্যবহৃত ৫টি অস্ত্র জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত হেলালকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার সকালে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম।
গত ১৪ নভেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে বনানী বি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ১১৩ নম্বর বাড়িতে অবস্থিত জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান এমএস মুন্সি ওভারসিজ এজেন্সির মালিক মো. সিদ্দিক হোসেন মুন্সিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহতরা হলেন- মোস্তাক হোসেন, মোখলেছুর রহমান ও মিরাজ পারভেজ।
ওই ঘটনায় বনানী থানায় দায়ের করা হত্যা মামলটির তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ।
হেলালকে গ্রেফতারের পর ডিবি উত্তরের উপ-কমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলম জানিয়েছিলেন, ব্যবসায়ী সিদ্দিক হোসেন মুন্সি হত্যা মামলার তদন্তে খুনের পরিকল্পনাকারী হিসেবে হেলালের নাম পাওয়া যায়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৭/আপডেট সময়: ১৫১০ ঘণ্টা
এসজেএ/জিপি/এএসআর