৭১’র মার্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মাগুরায় সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। প্রাথমিকভাবে মাগুরা শহরের নোমানী ময়দান ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করে মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়।
পরবর্তীতে অত্যাধুনিক অস্ত্রসজ্জিত পাক সেনারা মাগুরায় পৌঁছালে মুক্তিযোদ্ধারা শহর ছেড়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে যান।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোল্লা নবুয়ত আলী বাংলানিউজকে জানান, মাগুরা শহরের পিটিআই, ওয়াপদা ভবন, সরকারি কলেজ, আনছার ক্যাম্প, দত্ত বিল্ডিং দখল করে পাক সেনারা ঘাটি স্থাপন করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় রাজাকার, আলবদরদের সহযোগিতায় তারা মুক্তিকামী মাগুরাবাসীদের ধরে এনে অত্যাচার, নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ শুরু করেন। অসংখ্য মুক্তিকামী মাগুরাবাসীকে হত্যা করে তারা বর্তমান পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের পাশে পারনান্দুয়ালী ক্যানেলে মরদেহ ফেলে রাখেন।
পরে মুক্তিযোদ্ধারা জেলার শ্রীপুর, মহম্মদপুর, বিনোদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বীরোচিত যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তারা শ্রীপুর ও শৈলকুপা থানা দখল করে নেন। একাধিক সম্মুখ যুদ্ধে তারা পাক সেনা ও রাজাকারদের হতাহত করেন।
একপর্যায়ে ০৬ ডিসেম্বর আকাশ পথে মিত্র বাহিনীর বিমান হামলা এবং স্থলপথে মুক্তিবাহিনীর চাপে পাক সেনারা দিশেহারা হয়ে পড়েন।
০৭ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী মাগুরা শহরে প্রবেশ করে পাকবাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে তাদের বিভিন্ন ক্যাম্প ও গোলা বারুদ দখল করে নেয়। পরে প্রাণ ভয়ে পাক সেনারা মাগুরা জেলা ছেড়ে পার্শ্ববর্তী কামারখালী গড়াই নদী পার হয়ে ফরিদপুরের দিকে চলে যান।
৭ ডিসেম্বর সকাল থেকেই মাগুরায় মুক্তিবাহিনীর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। জয় বাংলা স্লোগানে গোটা শহরে উড়তে থাকে স্বাধীন দেশের পতাকা।
মাগুরা মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে র্যালি, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৭
টিএ