তাবলিগ জামাতের আয়োজনে শহরের সাগর পাড়ের ডায়াবেটিস পয়েন্টে অনুষ্ঠিত ইজতেমার শুরুতে বয়ান করেন কক্সবাজার বিমানবন্দর জামে মসজিদের খতীব ও ইজতেমা বাস্তবায়ন কমিটির জিম্মাদার আতাউল করিম।
প্রতিদিন ফযরের নামাজের পর থেকে এশার নামাজ পর্যন্ত বয়ান চলবে।
ইজতেমার মিম্বর থেকে প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় হবে। তবে, জুমার নামাজে কে ইমামতি করবেন- তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কাকরাইলের মুরব্বিরা কক্সবাজার পৌঁছে তা চূড়ান্ত করবেন বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই প্রথম অধিবেশন শেষ হয়েছে।
শীতের সকালে ইজতেমা মাঠে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। শহরের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও জেলা ও জেলার বাইরে থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা জেলেপার্ক ময়দানে জড়ো হয়েছেন।
আয়োজকদের দেওয়া তথ্যমতে, ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের জন্য ৯৫টি খুটির পয়েন্ট বসানো হয়েছে। প্রতি খুটিতে থাকবে ১৬টি খোপ। প্রতি খোপের আয়তন ৩২৪ বর্গফুট। ১২টি উপজেলার মুসল্লিদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে পৃথক ১২টি থাকার ঘর। প্রতি ঘরে সাদা পোশাকে থাকবে ২ জন করে গোয়েন্দা সংস্থার লোক। বয়ানের মিম্বর থেকে অন্তত ৩০০ ফুট দূরত্বে মুরব্বিদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে আলাদা তাবু। ওই তাবুতে থাকবেন কাকরাইলসহ দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বিরা। ইজতেমায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ বালিকা মাদরাসা সড়ক ও ডায়াবেটিস পয়েন্ট। এছাড়া ইজতেমা মাঠের চাদিকে মুসল্লিদের হাঁটাচলার সুবিধার্থে উম্মুক্ত জায়গা রাখা হয়েছে।
ইজতেমা আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানায়, ইজতেমা প্রাঙ্গণে বসানো হয়েছে প্রায় ৬শ টয়লেট, শতাধিক অস্থায়ী নলকূপ, সাতটি বিশাল আকারের ওজুখানা, ২২টি পানির মটর। মুসল্লিদের খেদমতের জন্য ইজতেমা কর্তৃপক্ষের এক হাজার ২০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। নিরাপত্তায় জেলা পুলিশের সাড়ে ৩’শ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
আজ বয়ান করবেন তাবলিগ জামাতের আহলে শুরা মাওলানা মোজাম্মেলুল হক, ছৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, মাওলানা মোশারফ ও কাকরাইল মসজিদের ওস্তাদ মাওলানা মনির বিন ইউসুফসহ দেশ-বিদেশের আরো বেশ কয়েকজন বক্তা।
মাগরিবের নামাজের পর প্রায় ৩ ঘণ্টা বয়ান হবে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে জামাতের সঙ্গে ইজতেমা মাঠে এশার নামাজ আদায় করবে মুসল্লিরা। এরপর খাবার ও পূর্নবিশ্রামের বিরতি। পরের দিন যথারীতি ফজরের পর থেকে বয়ান শুরু হবে।
ইজতেমা বাস্তবায়ন কমিটির জিম্মাদার আতাউল করিম বাংলানিউজকে জানান, পাঁচ লাখ মুসল্লি সমাগমের লক্ষ্য নিয়ে ইজতেমার আয়োজন করা হয়েছে। পুরো ইজতেমা স্থলের ১৭ একর জায়গায় প্যান্ডেল করা হয়েছে। জেলার রামু, চকরিয়া, সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া টেকনাফ, উখিয়া এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামা উপজেলার মানুষ ইজতেমায় অংশ নেবেন। এছাড়াও কক্সবাজারে অবস্থানরত দেশের বিভিন্ন স্থানের তাবলিগ জামাতের লোকজন ও বাংলাদেশ অবস্থানরত ওমান, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার তাবলিগ জামাতের লোকজন অংশ নেবেন।
পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, ইজতেমা ও মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তায় জেলা পুলিশের সাড়ে ৩’শ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। সেই সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারী থাকবে সবসময়।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘন্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৭
টিটি/বিএস